
ওঙ্কার ডেস্ক : পেহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর নির্মম জঙ্গি হামলার ১৫ দিন পর কড়া জবাব দিল ভারত। ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর মাধ্যমে পাকিস্তান এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের একাধিক জঙ্গি ঘাঁটি লক্ষ্য করে প্রত্যাঘাত হানল ভারতীয় বিমান বাহিনী। জানা গিয়েছে, এই অভিযানে অন্তত ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে। প্রয়োগ করা হয়েছে ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র, যাতে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ৭০ জন জঙ্গি।
জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান মাসুদ আজহার স্বীকার করেছেন, এই স্ট্রাইকে তাঁর পরিবারের ১৪ সদস্য নিহত হয়েছেন। ভারতীয় বিমান হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন আজহারের ভাই রউফ অসগর। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে রউফের ছেলের। নিহতদের মধ্যে এক মহিলা সদস্যও রয়েছেন। মাসুদের ঘনিষ্ঠ ৪ জন সহযোগীও এই অভিযানে নিহত হন।
অপারেশন সিন্দুর-এর পর দেশের উত্তরাংশে জারি হয়েছে চরম সতর্কতা। শ্রীনগর, জম্মু, লেহ্, অমৃতসর, ধর্মশালা, ভুজ, জোধপুর, জামনগর, চণ্ডীগড়, রাজকোট-সহ একাধিক বিমানবন্দরে বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। অমৃতসরগামী দুটি আন্তর্জাতিক উড়ানকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে দিল্লিতে। এই নিষেধাজ্ঞা আপাতত বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত বলবৎ ছিল। সাময়িকভাবে কর্তারপুর সাহিব করিডর বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সীমান্তে উত্তেজনার কারণে করিডর ব্যবহারকারী ভারতীয় পুণ্যার্থীদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি জানিয়েছেন, পেহেলগাঁও হামলার সঙ্গে সরাসরি পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার সংযুক্ত একটি সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্রেন্স ফ্রন্ট’ জড়িত। পাকিস্তান থেকেই জঙ্গিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, এমন নথিও উদ্ধার হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “এই হামলার মাধ্যমে উপত্যকা ও গোটা দেশে সাম্প্রদায়িক অশান্তি ছড়ানোই ছিল মূল উদ্দেশ্য। ধর্ম দেখে খুন করা হয়েছিল পর্যটকদের।”
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নরওয়ে, ক্রোয়েশিয়া এবং নেদারল্যান্ডস সফর স্থগিত করা হয়েছে। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখতেই এই সিদ্ধান্ত।