
ওঙ্কার ডেস্ক: ২৯ শে জানুয়ারি মঙ্গলবার নয়া দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাব অফ ইন্ডিয়ার স্পিকার হলে তপসিল জাতি আদিবাসী প্রাক্তন সৈনিক কৃষি বিকাশ শিল্প কেন্দ্রের উদ্যোগে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হল । এই সংস্থাটি পশ্চিমবঙ্গ এবং ভারতের অন্যান্য রাজ্যে প্রাকৃতিক ও জৈব চাষ, মৎস্য চাষ এবং নানা উদ্ভিদ প্রাণীজ সম্পদ নিয়ে কাজ করে চলেছে দীর্ঘ দিন ধরে ।বিশ্ব উষ্ণায়ন (Global Warming) বর্তমান বিশ্বে জলবায়ুর এক ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। পরিবেশের উপর এর ব্যাপক প্রভাব আগামী দিনে ভয়ঙ্কর সংকটে ফেলবে বিশ্ববাসীকে বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা। কৃষিক্ষেত্রে সার, কীটনাশক এবং হার্বিসাইডের মতো সিন্থেটিক রাসায়নিক ব্যবহারে ফসলের উৎপাদন বাড়লেও এর নেতিবাচক প্রভাব আগামী দিনে কৃষিক্ষেত্রে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করবে। তাই প্রাকৃতিক সম্পদকে কৃষিক্ষেত্রে কীভাবে ব্যবহার করে ফসলের উৎপাদন বাড়ানো যায় তা নিয়েই এই সংস্থা গত তিন দশক ধরে কাজ করে চলেছে। গোবর, গোমূত্র এবং জৈব মালচের মতো সম্পদ ব্যবহার করে জীববৈচিত্র্যকে স্থিতিশীল করা এবং এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফসল উৎপাদন করার প্রচার ও প্রসারের উদ্যোগ নিয়েছে তপসিল আদিবাসী প্রাক্তন সৈনিক কৃষি বিকাশ শিল্প কেন্দ্র।
ভারতে প্রাকৃতিক ও জৈব চাষের বার্তাকে দেশের প্রতিটি প্রান্তে ছড়িয়ে দিতে “প্রাকৃতিক চাষ সংক্রান্ত জাতীয় সেমিনার”-এর আয়োজন করা হয়েছে। দেশের ১৫টি রাজ্যের কৃষক, কৃষি-প্রযুক্তিবিদ, কৃষি-বিজ্ঞানী, প্রশাসনিক আধিকারিক ও কৃষি সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞরা এই সেমিনারে অংশগ্রহণ করেছেন। নয়া দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাব অফ ইন্ডিয়ার স্পিকার হলে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হল ২৯ জানুয়ারি, ২০২৫ মঙ্গলবার।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারত সরকারের উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রী, জুয়াল ওরাম। ভারত সরকারের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী, রামনাথ ঠাকুর এবং ভারত সরকারের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ভগীরথ চৌধুরী।
সেমিনারে উপস্থিত মন্ত্রীরা কৃষিক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার আহ্বান জানান। ভারতের কৃষিক্ষেত্রে প্রাকৃতিক চাষাবাদ পদ্ধতির মাধ্যমে কৃষকদের উৎসাহিত করা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্ন। এতে একদিকে চাষের খরচ কমে। অন্যদিকে জৈব কৃষি পদ্ধতি সুস্বাদু ও সুস্বাস্থ্যের ধারক ও বাহক। তাই সার-রাসায়নিক পদার্থ বর্জন করে প্রাচীন কৃষি কৌশলকে উৎসাহিত করার প্রয়াস নিয়েছে ভারত সরকারের কৃষি মন্ত্রক।
এই সেমিনারের অন্যতম আহবায়ক তথা উদ্যোক্তা তপসিল আদিবাসী প্রাক্তন সৈনিক কৃষি বিকাশ শিল্প কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক সৌমেন কোলে। সংস্থার নানা প্রতিবন্ধকতাকে সরিয়ে দিয়ে গত তিন দশক ধরে এই সংস্থাকে বিন্দু থেকে সিন্ধুতে পরিণত করেছেন। বর্তমানে বাংলা এবং ভারতের প্রতিটি কোণে এই সংস্থার প্রতিনিধিরা প্রাকৃতিক কৃষি ব্যবস্থা নিয়ে চাষিদের উৎসাহিত করে চলেছেন। এই সেমিনার সম্পর্কে সৌমেন কোলে বলেন, আমাদের দেশের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ কৃষির উপর নির্ভরশীল। রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহারে চাযের খরচ ক্রমশ বাড়ছে। কিন্তু চাষিরা শ্রম ও ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না। প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করে চাষে খরচ কমানোর একমাত্র উপায়। এতে চাষি ও উপভোক্তা দুজনেই উপকৃত হবেন। আমাদের সংস্থার প্রতিনিধিরা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে চাষিদের এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও নানা বিষয়ে সহায়তা দিচ্ছেন। প্রাকৃতিক ও জৈব চাষ স্বাস্থ্যকর। মানুষের নানা রোগ থেকে মুক্তি দিচ্ছে। এই পদ্ধতিতে উৎপাদিত ফসল দেশের সঙ্গে বিদেশেও চাহিদা বাড়ছে। বহু কৃষক বন্ধু এই ফসল রপ্তানি করে দেশের অর্থনীতিকে চাঙা করছে