
ওঙ্কার ডেস্ক- মহাকুম্ভে ম্যাসাকারের পর যোগী সরকারের গলায় আরেক কাঁটা বিঁধলো। বৃহস্পতিবার রাতে অযোধ্যায় ভাগবত পাঠ শুনতে গিয়ে নিখোঁজ ছিল এক দলিত তরুণী। শনিবার একটি নালায় তার ক্ষতবিক্ষত দেহের দেখা মিলল। মৃতদেহের সারা শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন, উপড়ে নেওয়া হয়েছে চোখও। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি স্বাভাবিক ভাবে মিল্কিপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে গরম ইস্যু। মহাকুম্ভের দুর্ঘটনার পর এই মর্মান্তিক ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে উত্তরপ্রদেশের রাজনীতি। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশি তদন্ত চলছে। রাজ্যের সমাজবাদী পার্টির সাংসদ অবধেশ প্রসাদ বিষয়টি নিয়ে লোকসভায় প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলবেন বলে জানিয়েছেন। হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, বিচার না পেলে সাংসদ পদ ছেড়ে দেবেন।
রবিবারই মিল্কিপুরে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে এই অবধেশের মন্তব্যকে ‘নাটক’ বলে জানিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ যোগী। তিনি এই ঘটনায় সমাজবাদী পার্টিকেই অভিযুক্ত করেছেন। বলেছনে, তলিয়ে দেখলে হয়তো দেখা যাবে সমাজবাদী দলেরই কোনও ঘৃণ্য জন্তু এই অপরাধ করেছে। সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব জানিয়েছেন, এই ‘অমানবিক ঘটনায়’ তাঁর দল প্রকৃতই আহত হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিজেপির মদতেই রাজ্যে এই ধরণের ঘটনা বেড়ে চলেছে। দলিত মহিলার উপর এই মর্মান্তিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রায়বরেলীর কংগ্রেস সাংসদ তথা বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীও। এই ঘটনার জন্য তিনি স্থানীয় প্রশাসনকেও দুষেছেন। তিনি বলেছেন, সময় থাকতে প্রশাসন যদি নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ শুনত, তা হলে হয়তো মেয়েটির প্রাণ বেঁচে যেত। এই ঘৃণ্য অপরাধের জন্য আরও এক মেয়ের জীবন শেষ হয়ে গেল। রাহুলের অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশের ‘বহুজন-বিরোধী’ বিজেপি সরকারের মদতেই দলিতদের উপর নির্যাতনের ঘটনা বাড়ছে। ঘটনায় অবিলম্বে তদন্ত দাবি করে দোষীদের কড়া শাস্তি চেয়েছেন রাহুল।
রাজ্য রাজনীতির এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে বুধবার মিল্কিপুর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। গত লোকসভা নির্বাচনে মিল্কিপুরের বিধায়কপদ ছেড়ে ফৈজ়াবাদের সাংসদ হয়েছিলেন সমাজবাদী পার্টির অবধেশ প্রসাদ। সেকারণেই এই উপনির্বাচন। এই নির্বাচনে কার্যত সম্মানের লাড়াইতে মাঠে নেমেছে সমাজবাদী পার্টি ও বিজেপি। মহাকুম্ভে একের পর এক বিপর্যয়ের মধ্যে এই নির্বাচনের অনেকটাই গুরুত্ব রয়েছে আদিত্যনাথ যোগীর কাছে। তারমধ্যে এমন এক ঘটনায় প্রশাসনিক ব্যর্থতার দায়ভার নিশ্চিত রূপে যোগীর মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়ালো।