
স্পোর্টস ডেস্ক : ভারতীয় ফুটবলের সাম্প্রতিক উন্নতির জন্য অধিকাংশ কৃতিত্ব দেওয়া উচিত ইন্ডিয়ান সুপার লিগকে, ভারতীয় ফুটবল মহলে অনেকেই এ কথা একবাক্যে স্বীকার করে নেন। কিন্তু এ বার এই মন্তব্য শুধু ফুটবল মহল নয়, ভেসে আসছে ফুটবলের বাইরে থেকেও। ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মাও এই ব্যাপারে একমত। তাঁরও ধারণা, আইএসএল-এর জন্য আজ ভারতীয় ফুটবল এতটা উঠে আসতে পেরেছে।
চলতি বছরে ভারত এ পর্যন্ত ১১টি ম্যাচ খেলেছে। তার মধ্যে ন’টিতে জিতেছে এবং দু’টিতে ড্র করেছে। অর্থাৎ এই বছরে এখন পর্যন্ত হারের মুখে দেখেনি ক্রোয়েশিয়ান কোচ ইগর স্টিমাচের প্রশিক্ষণাধীন ভারত। টানা আটটি ম্যাচে গোল না খাওয়ার পর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের গ্রুপ পর্বে কুয়েতের বিরুদ্ধে গোল খান সুনীলরা, তাও আত্মঘাতী গোল। গত ছ’মাসে তিনটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। এমন ধারাবাহিকতা অনেকদিন দেখেনি ভারতীয় ফুটবলপ্রেমীরা। সে দেশের মাটিতেই হোক বা বিদেশে। এই ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের ফলে ফিফার বিশ্ব ক্রমতালিকায় ৯৯ নম্বরে উঠে এসেছে ভারত।
ভারতীয় ফুটবলের এই উত্থানে খুশি ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক রোহিত শর্মা মুম্বইয়ে এক ইভেন্টে বলেন, “ওরা (ভারতীয় ফুটবল দল) এখন যেখানে রয়েছে, সেখানে বেশ লম্বা একটা লাফ দিয়ে উঠেছে। এতে আইএসএলের অবদান অনেক। এই লিগে যে সুযোগ পায় আমাদের ফুটবলাররা সেটাই সবচেয়ে বড় ব্যাপার। ক্রিকেটে যখন আইপিএল আসে, তখন আমাদের দেশের প্রচুর ক্রিকেটাররা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলার সুযোগ পায়। ভারতে এই লিগগুলোর গুরুত্ব এখানেই”।
গত জুন-জুলাইয়ে ফিফা ক্রমতালিকায় একেবারে কাছাকাছি থাকা দল লেবাননকে ভারত তিনবারের মুখোমুখিতে যে ভাবে দু’দু-বার হারিয়েছে ও একবার ড্র করেছে, তার কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। এরপরে কুয়েত। যাদের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করে এক ম্যাচে ড্র করে (শেষ মুহূর্তে নিজেদের অসাবধানতায় হওয়া নিজ গোলে) এবং সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে এক গোলে পিছিয়ে থেকেও অবশেষে টাই ব্রেকারে হারায় তাদের।
আগামী জানুয়ারিতে কাতারে এএফসি এশিয়ান কাপের মূলপর্বে ভারতকে লড়তে হবে এশিয়ার তাবড় ফুটবল শক্তির বিরুদ্ধে। তার আগে রয়েছে এশিয়ান গেমসও। সেখানে ভারত কতটা এগোতে পারবে, তা নিয়ে অনেকেরই মনে সন্দেহ ছিল। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে যে দাপট নিয়ে ফুটবল খেলেছেন সুনীল ছেত্রী ও তাঁর সতীর্থরা, তার পরে অনেকেই এশিয়ান গেমস ও এশিয়ান কাপে ভাল ফল করার ব্যাপারে ক্রমশ আশাবাদী হয়ে উঠছেন।
তাঁদের মধ্যে রোহিত শর্মাও অন্যতম। “আমি দেখতে চাই ওরা কোনও ইউরোপীয় দলের বিরুদ্ধে মাঠে নেমে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করছে। যখনই ভারতীয় দলকে খেলতে দেখি, ওদের যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী লাগে। আমাদের ফুটবলারদের দক্ষতাও এখন বেড়েছে। এখন ওদের আরও সুযোগ পাওয়া দরকার। ওরা এখন যত বেশি ইউরোপ বা বিশ্বের অন্যান্য দেশে খেলার সুযোগ পাবে, তত উন্নতি করবে”, বলেন ভারত অধিনায়ক।
আগামী দু’মাসে এশিয়ান গেমসের আগে ভারতীয় দল থাইল্যান্ডে কিংস কাপে অংশ নেবে। অন্যদিকে, ৫ অক্টোবর থেকে ১৯ নভেম্বর আসন্ন আইসিসি বিশ্বকাপে ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দেবেন রোহিত শর্মা। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে তাই ভারতীয় ক্রীড়াপ্রেমীদের ফুটবল ও ক্রিকেট— দুই দিকেই নজর রাখতে হবে একসঙ্গে।