
ওঙ্কার ডেস্ক: শিয়ালদা স্টেশনে উদ্ধার ১ লক্ষ টাকা সহ বেওয়ারিশ ব্যাগ। রোজ হাজার হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন শিয়ালদহ স্টেশনের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম দিয়ে। তেমনই এক ব্যস্ত দিনের মধ্যে হঠাৎই নজরে আসে একটি নির্জন কোণে পড়ে থাকা কালো রঙের ব্যাগ। প্রথমে সন্দেহজনক মনে হলেও কেউই হয়তো ভাবেননি, এই ব্যাগ ঘিরেই তৈরি হবে এক রহস্যময় চমক। ব্যাগ খুলতেই বেরিয়ে এলো নগদ ১,০৩,৮২০ টাকা !
ঘটনাটি ঘটে ১২৩৫৮ দুর্গিয়ানা এক্সপ্রেসে। ট্রেনটি স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় রুটিন পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছিলেন শিয়ালদহ স্টেশনের চিফ ইনস্পেক্টর অব টিকিট অসিত কুমার পাল। তাঁর নজরেই ধরা পড়ে ট্রেনের একটি কামরায় পড়ে থাকা ওই সন্দেহজনক ব্যাগটি। নিয়ম অনুযায়ী কোনোরকম ঝুঁকি না নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে রেল নিরাপত্তা বাহিনীকে খবর দেওয়া হয়।
ব্যাগটি পরীক্ষা করে দেখা যায়, তাতে রয়েছে নগদ টাকা ছাড়াও একাধিক মূল্যবান ব্যক্তিগত সামগ্রী, যার মধ্যে ছিল চাবি, ঘড়ি, মোবাইল অ্যাকসেসরিজ ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র। আশ্চর্যের বিষয়, এমন বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ কেউ কীভাবে ফেলে রেখে চলে গেলেন, তা নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন।
রেল পুলিশ সূত্রে খবর, ব্যাগটি ইতিমধ্যেই তাঁদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে ট্রেনের সিসিটিভি ফুটেজ ও টিকিট বুকিং রেকর্ড। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, এটি কোনো যাত্রীর অসাবধানতার ফলেই ফেলে যাওয়া হয়েছে। তবে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অসিত কুমার পালের এই তৎপরতা রেল কর্তৃপক্ষের তরফে বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে। তাঁর দ্রুত পদক্ষেপ না থাকলে হয়তো টাকা ও সামগ্রী গায়েব হয়ে যেতে পারত। অনেকেই বলছেন, এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হল রেল কর্মীরা শুধু টিকিট চেকার নন, তাঁরা যাত্রী সুরক্ষারও এক অদৃশ্য পাহারাদার।
প্রথমে ব্যাগটি খালি অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন এক রেল কর্মী সন্দেহে তৎপর হন। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে তিনি দ্রুত সতর্কতা অবলম্বন করেন এবং ব্যাগের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেন। একই সঙ্গে, সম্ভাব্য মালিকের খোঁজে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও গ্রহণ করেন তিনি। পরবর্তীতে, সমস্ত প্রোটোকল মেনে ব্যাগটি কলকাতা স্টেশনে রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স-এর হাতে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে, আরপিএফ ব্যাগের প্রকৃত মালিককে শনাক্ত করার জন্য তদন্ত চালাচ্ছে এবং তার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
যদিও এমন ফেলে যাওয়া ব্যাগ শিয়ালদহ স্টেশনে হামেশাই দেখা যায়, তবে এমন বিপুল অর্থ উদ্ধারের ঘটনা নিঃসন্দেহে বিরল। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রকৃত মালিক সঠিক প্রমাণসহ যোগাযোগ করলে প্রয়োজনীয় যাচাইয়ের পর তাঁর হাতে ব্যাগটি ফিরিয়ে দেওয়া হবে।