
স্পোর্টস ডেস্ক :ফাইনালের পথে শুরুতেই হোঁচট খেলেও তা নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় নেই মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের কোচ হোসে মোলিনা। বৃহস্পতিবার সেমিফাইনালের প্রথম লেগে জামশেদপুরের কাছে ১-২ হারের পরও সবুজ-মেরুন শিবিরের স্প্যানিশ কোচের কথা শুনে মনে হল না, দলের খেলায় তিনি অখুশি। উল্টে বললেন, দলের পারফরম্যান্সে তিনি খুশি। মোলিনার আশা, যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে সমর্থকদের সামনে প্রয়োজনীয় ব্যবধানে জিতবেন এবং ফাইনালেও উঠবেন।
বৃহস্পতিবার উত্তেজনায় ভরা ম্যাচে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট হাভিয়ে সিভেরিওর গোলে পিছিয়ে যাওয়ার পরও কামিংসের বিশ্বমানের গোলে প্রথমার্ধেই সমতা আনে। দ্বিতীয়ার্ধের নির্ধারিত সময়ে মোহনবাগান তাদের আধিপত্য বজায় রাখলেও সংযুক্ত সময়ে হাভিয়ে হার্নান্ডেজের গোলই জয় এনে দেয় খালিদ জামিলের দলকে। এই হার সত্ত্বেও ফাইনালে উঠতে গেলে আগামী সোমবার ঘরের মাঠে দ্বিতীয় লেগে অন্তত দু’গোলের ব্যবধানে জিততে হবে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে। যা নিয়ে দল খুব একটা চাপে নেই বলেই জানান মোলিনা।
এ দিন ম্যাচের পর সাংবাদিকদের স্প্যানিশ কোচ বলেন, “প্রথমার্ধে আমাদের বল পজেশন বেশি থাকলেও আমরা বেশিরভাগ অ্যাকশনই শেষ করে উঠতে পারিনি। দ্বিতীয়ার্ধে বরং অনেক বেশি সুযোগ তৈরি করেছি আমরা। তবে ওদের গোলকিপার, ডিফেন্ডাররা অনবদ্য ভাবে সেগুলো রুখেছে। প্রতিপক্ষ রক্ষণে যদি সমানে ৬-৭ জনকে দাঁড় করিয়ে রাখে, তা হলে গোল করা কঠিন হয়ে ওঠে। তবু আমরা গোলের সুযোগ তৈরি করেছি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দুটো স্পষ্ট সুযোগ পেয়েছিলাম। তখনই ৩-১ হয়ে যেত ম্যাচটা। কিন্তু আমরা তা করতে পারিনি। শেষে একটা কাউন্টার অ্যাটাকে উঠে গোলটা করে দেয় ওরা। সাহসী ফুটবল খেলেছে এবং সেজন্যই সফল হয়েছে জামশেদপুর।”
এ দিন পাঁচটি পরিবর্তন করে দল নামান মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের কোচ। দলের দুই আহত সদস্য আপুইয়া ও মনবীর সিং এ দিনের স্কোয়াডেই ছিলেন না। তাঁদের না থাকার জন্য পরিকল্পনায় বদল করতে হয় বলে জানান শিল্ডজয়ী দলের কোচ। বলেন, “মনবীর, আপুইয়া না থাকায় পরিকল্পনায় বদল আনতে হয়েছে। তবে যে পরিকল্পনা নিয়ে খেলেছিলাম, তাতে খারাপ হয়নি। মনবীর খেললে যে কৌশলে খেলি, সহাল খেললে তো আর সে রকম হবে না। অন্য ভাবে আক্রমণে উঠতে হয়। তবে যে রকমই খেলে থাকুক আমার দল, আমি খুশি। ২০-২৫ দিন পর ম্যাচ খেলতে নেমেছিল আমার দল। সেই তুলনায় মোটেই খারাপ খেলেনি। আমি দলের পারফরম্যান্সে খুশি। যদিও দুগোল খেয়ে ভাল লাগেনি। তবে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সল্টলেকে সম্পুর্ণ অন্য খেলা দেখবেন”।
সোমবার ফিরতি লেগের ম্যাচে জেতার ব্যাপারে যথেষ্ট আশাবাদী মোলিনা। তিনি বলেন, “ঘরের মাঠে খেলা আমাদের কাছে চাপের নয়, আনন্দের। ৫০-৬০ হাজার সমর্থকদের সামনে খেলতে দারুন লাগে। তবে পরের ম্যাচেও কোনও চাপ থাকবে না। পরের ম্যাচে আরও ভাল খেলব আমরা। এই পর্যায়ের লড়াই কখনও সোজা হয় না। যদি ওরা তিন গোলে জিতে থাকত, তা হলে হয়তো কাজটা কঠিন হত। এখানে অতটা কঠিন নয় কাজটা। পরের ম্যাচেও আমাদের কৌশল ও পরিকল্পনা প্রায় একই থাকবে। তবে আমাদের আরও ভাল খেলতে হবে।”
এই পর্যায়ের ফুটবলে সবসময়ই চাপ থাকে বলে জানান মোলিনা। বলেন, “আমাদের সব ম্যাচে জিততেই হবে এমন কথা নেই। সারা বিশ্বে কোথাওই এমন হয় না। হারলেও এগিয়ে যেতে হয়। চাপ সবসময়ই থাকে। সেই চাপ সামলেই খেলতে হয়। আমরা আজ জিতিনি ঠিকই। কিন্তু আমাদের পরের ম্যাচে জিততে চেষ্টা করতে হবে। আশা করি পরের ম্যাচে আমরা জয়ে ফিরব এবং ফাইনালে উঠব।”