
ওঙ্কার বাংলা অনলাইন ডেস্কঃ দীর্ঘ ৩২ বছর পর শিয়া সম্প্রদায়কে শ্রীনগরে মহরমের তাজিয়া বের করার অনুমতি দিল প্রশাসন। শনিবার মহরম। তার আগে মহরমের অষ্টম দিন বৃহস্পতিবারে প্রথামত শ্রীনগরের গুরুবাজার থেকে ডালগেট পর্যন্ত ঐতিহ্যবাহী রুটে মহরমের তাজিয়া বের করলেন শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষজন। মঙ্গলবার জম্মু-কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহার কাছে মহরমের তাজিয়া বের করার জন্য অনুমতি চান শিয়া নেতৃত্ব। বুধবারই সেই অনুমতি দিয়ে দেয় কাশ্মীর প্রশাসন। এক বার্তায় কাশ্মীরের বিভাগীয় কমিশনার বিজয় কুমার বিধুরি জানান গুরুবাজার থেকে ডালগেট পর্যন্ত মহরমের মিছিলের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে প্রশাসন। ৩ দশকেরও বেশি সময় পর এই অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হল। তবে সকাল ৬ টা থেকে ৮ টার মধ্যে এই মিছিল শেষ করতে হবে বলেও নির্দেশিকায় জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। মহরমের তাজিয়া বের করার অনুমতি দিলেও একগুচ্ছের নির্দেশিকাও জারি করেছে প্রশাসন। শ্রীনগরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার আইজাজ আসাদ জানান মহরমের মিছিল থেকে দেশ বিরোধী, সম্প্রীতি বিরোধী এবং উগ্র ধর্মীয় স্লোগান দেওয়া যাবে না। যাতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত হয় বা উত্তেজনা ছড়ায় এমন কোনও কার্যকলাপও করা যাবে না বলে প্রশাসনের তরফ থেকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে উদ্যোক্তাদের। দেশের ঐক্য বিরোধী, বিচারাধীন কোনও বিষয় নিয়েও স্লোগান দেওয়া যাবে না বলেও নির্দেশিকায় স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে। মহরমের প্রশাসনে ড্রোন ব্যবহার করা হবে না বলেও প্রশাসনের তরফে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত ১৯৮৯ সালে মহরমের তাজিয়াকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। অশান্তির আগুন জ্বলে ভূস্বর্গে। দেশ বিরোধী, বিচ্ছিন্নতাবাদী স্লোগান ওঠে। সেই অশান্তির পেছনে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির ইন্ধন ছিল বলে রিপোর্ট দেয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। তারপরই শ্রীনগরের কেন্দ্র স্থল গুরুবাজার থেকে ডালগেট পর্যন্ত মহরমের মিছিলের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপায় প্রশাসন। দীর্ঘ ৩২ বছর পর উঠে গেল সেই নিষেধাজ্ঞা। এদিন শান্তিপূর্ণভাবেই শ্রীনগরে শেষ হল মহরমের তাজিয়া। মহরমের প্রাক্কালে তার জন্য রাজ্যবাসীকে অভিনন্দন জানান জম্মু-কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা।