
সুমিত চৌধুরী: টেকনিশিয়ান এবং পরিচালকদের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব টালিগঞ্জকে অস্থিরতার মধ্যে নিয়ে এসেছে তার পিছনে গভীর রাজনৈতিক চোরা স্রোত রয়েছে। শুধুমাত্র একজন পরিচালককে বয়কট করা বা না করাটা এখন গৌণ ইস্যু। ঘটনা প্রবাহ যা দাঁড়াচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে শাসকদলের দুটি বিরোধী শিবির প্রবল কলহে লিপ্ত হয়ে পড়েছে।
টেকনিশিয়ানদের সংগঠন ফেডারেশনের নেতৃত্বে পরিচিতভাবেই স্বরূপ বিশ্বাস এবং অরূপ বিশ্বাসরা রয়েছেন। তৃণমূলের নেতা এবং মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ভাই স্বরূপ বিশ্বাসই এক্ষেত্রে বেশি চর্চিত।
কিন্তু উল্টো দিকে শিবিরের যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারাও সকলে তৃণমূলের একেবারে প্রথম সারির মুখ। টালিগঞ্জপাড়ায় এই মুহূর্তে গুঞ্জন কার্যত রাজ চক্রবর্তী, পরমব্রতরা টালিগঞ্জপাড়ায় স্বরূপ বিশ্বাসের একচেটিয়া আধিপত্য আর মেনে নিতে রাজি নন। তারই পরিণতিতে এই বিরোধ। রাহুল সেখানে একটা ইস্যু অবশ্যই। কিন্তু ঘটনার ব্যাপকতা রাহুলকে ছাড়িয়ে।
টালিগঞ্জপাড়ায় পরিচালকদের সঙ্গে এই বিরোধ কার্যত নজির বিহীন। প্রযোজকদের সঙ্গে টেকনিশিয়ান দের বিরোধ বাম আমলেও হয়েছে। দু একদিনের গন্ডগোলের পর সেটা মিটেও গেছে। কিন্তু এবার প্রভাবশালী পরিচালকরা টেকনিশিয়ানদের সঙ্গে মুখোমুখি টক্কর নিচ্ছেন। কার্যত এটা স্বরূপ বিশ্বাস অরূপ বিশ্বাসদের সামনে খোলা চ্যালেঞ্জ। পেছনে রাজনৈতিক জোরালো মদত না থাকলে অরূপ বিশ্বাসের সামনে এই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়া সম্ভব নয়।
টালিগঞ্জপাড়ায় আর্থিক বিনিয়োগের অবস্থা খুব একটা বিরাট কিছু ভালো নয়। ইন্ডাস্ট্রির চেহারা দ্রুত বদলাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে টেকনিশিয়ান পরিচালক বিরোধ সামগ্রিকভাবে জটিলতা বাড়াবে।
আমার নিজের ধারণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি হস্তক্ষেপ না করলে এই বিরোধ চট করে মিটবে না। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে আপাতত শান্তি কল্যাণ হতে পারে কিন্তু যেভাবে টালিগঞ্জ পাড়া আড়াআড়ি বিভক্ত হচ্ছে, শাসকদলের দুটি শিবিরকে ধরে তাতে ফাটলটা চওড়া।