
ওঙ্কার অনলাইন ডেস্কঃ মঙ্গলবার দেশের মধ্যে প্রথম রাজ্য উত্তরাখণ্ডে পেশ হল অভিন্ন দেওয়ানি বিল বা Uniform Civil Code Bill. ৬ ফেব্রুয়ারি উত্তরাখণ্ড বিধানসভায় ১৮২ পাতার অভিন্ন দেওয়ানি বিলটি পেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী পুস্কর সিং ধামি। বিলটিতে মুসলিমদের একের বেশি বিয়ে বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে। বর্তমানে বিয়ে এবং সম্পত্তির অধিকারের মতো ব্যক্তিগত বিরোধের নিস্পত্তির জন্য ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের জন্য ভিন্ন ভিন্ন আইন রয়েছে । সেগুলি বাতিল করার কথা বলা হয়েছে অভিন্ন দেওয়ানি বিলটিতে। প্রসঙ্গত ২০২২ সালে উত্তরাখণ্ড বিধানসভা ভোটের আগে Uniform Civil Code বা UCC চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল পদ্ম শিবির। জেতার পর ওই বছরের ২৭ মে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জনপ্রকাশ দেশাইয়ের নেতৃত্বে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে পুস্কর সিং ধামির সরকার। সম্প্রতি ৭৪৯ পাতার সেই রিপোর্ট জমা পরে। সেই রিপোর্ট থেকেই ১৮২ পাতার এই খসড়া বিলটি মঙ্গলবার উত্তরাখণ্ড বিধানসভায় পেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী পুস্কর সিং ধামি। জয় শ্রী রাম ধ্বনিতে বিলটিকে স্বাগত জানান বিজেপি বিধায়করা। বিলটিতে মূলত চারটি বিষয় রয়েছে। বিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ, লিভ ইন সম্পর্ক এবং উত্তরাধিকার। খসড়া বিলে সকল ধর্মের জন্য বহু বিবাহ এবং বাল্য বিবাহ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সমস্ত ধর্মের জন্যই বিবাহ বিচ্ছেদের একই নিয়মেরও প্রস্তাব করা হয়েছে খসড়া বিলটিতে। অভিন্ন দেওয়ানি বিলটিতে সমস্ত ধর্মের পুত্র এবং কন্যা সন্তানদের উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে। অবৈধ সন্তানদেরও পৈত্রিক সম্পত্তির ক্ষেত্রে সমানাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। দত্তক নেওয়া সন্তানরাও উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে সমান ভাগ পাবেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে খসড়া বিলটিতে। মুসলিম মহিলা সহ সকল মহিলাদের দত্তক নেবার অধিকার দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও লিভ ইন সম্পর্ককেও আইনগত ভাবে রেজিস্ট্রার বা নিবন্ধিকরণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। লিভ-ইনের ক্ষেত্রে স্থানীয় থানায় রেজিস্ট্রেশন না করলে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং ৬ মাসের কারদণ্ডের সংস্থানও রাখা হয়েছে বিলটিতে। বিয়ের রেজিস্ট্রেশন না করলে সরকারি সুবিধা মিলবে না বলেও বিলে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণেও জোড় দেওয়া হয়েছে বিলটিতে। উত্তরাখণ্ডে প্রথম অভিন্ন দেওয়ানি বিল বা Uniform Civil Code Bill পেশের পর দেশ জুড়েই সোস্যাল মিডিয়ায় আলোড়নের সৃষ্টি হয়েছে নেট নাগরিকদের মধ্যে । অনেকে যেমন এই খসড়া বিলের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন অনেকে আবার বিরোধিতায় সরব হয়েছেন। অনেকেই আবার দাবি করেছেন দেশজুড়েই অভিন্ন দেওয়ানি আইন চালু করার।