
ওঙ্কার বংলা ডেস্ক: ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড দিল ইয়েমেন। ইয়েমেনের রাষ্ট্রপতি রাশাদ আল-আলিমি মৃত্যুদণ্ডে অনুমোদন দিয়েছেন। ২০১৭ সাল থেকে এক ইয়েমেনি নাগরিককে হত্যার দায়ে কারাগারে রয়েছেন তিনি। আগামী এক মাসের মধ্যে তাঁর সাজা কার্যকর হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে নিমিশা প্রিয়ার পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক বিবৃতিতে বলেন, ‘নিমিশার পরিবার সব রকম চেষ্টা করেছে। সরকার যথাসাধ্য সাহায্য করছে।’
২০১৭ সালে ইয়েমেনি নাগরিক তালাল আবদো মাহদিকে হত্যা করার জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন নিমিশা প্রিয়া। এক বছর পরে, ইয়েমেনের একটি আদালত তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। এরপর থেকে মেয়ের মুক্তির জন্য সবরকমভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে তাঁর পরিবার। নিম্ন আদালতের রায়ের বিরোধিতা করে প্রিয়ার পরিবার ইয়েমেনের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু ২০২৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট তাদের আবেদন নাকচ করে দেয়। এবার সে দেশের প্রেসিডেন্টও প্রিয়ার প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করে দিল। তবে নিহত ইয়েমেনের নাগরিকের পরিবার ও স্থানীয় উপজাতি নেতা যদি প্রিয়াকে ক্ষমা করে দেন তবে মৃত্যুদণ্ড থেকে রক্ষা পাবেন তিনি।
উল্লেখ্য কেরলের পালাক্কড় জেলার বাসিন্দা নিমিশা প্রিয়া। ২০০৮ সাল থেকে ইয়েমেনের এক হাসপাতালে কাজ করতেন তিনি। ইয়েমেনে স্বামী এবং মেয়েকে নিয়ে থাকতেন তিনি। ইয়েমেনের নাগরিক মাহদির সঙ্গে যোগাযোগ হয় তাঁর। মাহদির সঙ্গে যৌথভাবে সেদেশে একটি ক্লিনিক খোলেন তিনি। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে দুই অংশীদারের মধ্যে বিরোধ তৈরী হয়। অভিযোগ, মাহদি প্রিয়ার পাসপোর্ট কেড়ে নেন এক সময়। এরপর নিজের পাসপোর্ট ফেরত পাবার জন্য বহুবার মাহদিকে বললেও তিনি তা ফেরত দেননি। শেষমেষ ইয়েমেনের পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি। কিন্তু অভিযোগ, পুলিশে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। তাই পাসপোর্ট ফিরে পাবার জন্য মাহদিকে ঘুমের ইঞ্জেকশন দিয়েছিলেন প্রিয়া। তার ওভারডোজের ফলে মৃত্যু হয় তাঁর। এরপর প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যে একজনের সাহায্যে মাহদির দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে জলের ট্যাঙ্কে ফেলে দেন তিনি। পরে ইয়েমেন থেকে পালানোর সময় ধরা পড়ে যান প্রিয়া।