
স্পোর্টস ডেস্ক : ১৮ বছরের লড়াই আর প্রতীক্ষা, কাকতলীয় হলেও বিরাট কোহেলি্র ১৮ নম্বর জার্সি যেন ১৮ বছরেই হাতের মুঠোয় গুঁজে দিল এত বছরের স্বপ্ন-পূরণ। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সব পুরস্কারই পেয়েছেন। অধরা ছিল আইপিএল। ক্রিকেট জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তাও পেয়ে গেলেন কোহেলি। তাই বাঁধতে পারেননি চোখের জল। জয়ের মুহূর্তে ভরে গেছে আনন্দাশ্রু। বলেছেন, “‘আইপিএল জিতব ভাবিনি”। এত বছর অপেক্ষা করতে করতে এক সময় মনে হয়েছিল দীর্ঘ ক্রিকেট জীবনে আইপিএলের পিছনে শুধু ছোটাই সার হল। এবার বিরাটের মুকূটে উঠল আইপিএল ট্রফি। টানটান উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে ৬ রানে জিতে ২০২৫ আইপিএল চ্যাম্পিয়ন আরসিবি।

আইপিএলের ফাইনালে সবারই চোখ ছিল বিরাটের দিকে। ম্যাচ শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট পর ধারাভাষ্যকার ম্যাথু হেডেন তাঁকে ধরলেন। তখনও কোহেলির চোখ যথেষ্ট আর্দ্র। যেন একটা বিশাল ঝড় পেরিয়ে এলেন তিনি। কোহলি জানিয়েছেন, “এই ট্রফি দলের জন্য যতটা, ততটাই সমর্থকদের জন্য। ১৮টা বছর পেরিয়ে গিয়েছে এই দিনটা দেখতে। এই দলটাকে নিজের যৌবন, নিজের সেরা সময় এবং অভিজ্ঞতা দিয়েছি। প্রত্যেক মরসুমে ট্রফি জেতার আপ্রাণ চেষ্টা করেছি, নিজের সবটা দিয়েছি। তাতেও ট্রফি পাইনি। অবশেষে এই দিনটা দেখতে পাওয়া অবিশ্বাস্য এক অনুভূতি”। তিনি আরও বলেন, “কোনও দিন ভাবিনি এই দিনটা দেখতে পারব। তাই শেষ বলটা হওয়ার পর নিজের আবেগ আর সামলাতে পারিনি”।

ফাইনালে টসে জিতে ফিল্ডিং নেয় পাঞ্জাব। প্লে-অফ ম্যাচে আরসিবির কাছে হারের স্মৃতি ভোলেননি, তাই হয়তো পাঞ্জাব অধিনায়ক শ্রেয়স আয়ার টসে জিতে ফিল্ডিং নেন। শুরুতে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে বেঙ্গালুরু। ওপেনার ফিলিপ সল্ট ৯ বলে ১৬ রান করেন। এগোচ্ছিলেন বড় রানের দিকে। কিন্তু তখনই জেমিসনের বলে শ্রেয়সের হাতে ক্যাচ দেন সল্ট। এরপর মায়াঙ্ক আগরওয়ালকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস টানতে থাকেন বিরাট কোহলি। ফাইনালে কিং কোহলির ব্যাট জ্বলে উঠবে এমন প্রত্যাশা তো সকলের থাকে। তবে এদিন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সেভাবে মেলে ধরতে পারলেন না তিনি। ৩৫ বলে ৩টি চার, ৪৩ রানে আউট হলেন। একটুর জন্য হাপ সেঞ্চুরি ফসকে গেল। স্বাভাবিক ভাবেই হতাশ ভক্তরা। রান পেলেন না মায়াঙ্ক আগরওয়ালও। ১৮ বলে ২৪ রান। অধিনায়ক রজত পাতিদারও ফাইনালে বড়ো স্কোর করতে ব্যর্থ। ১৬ বলে ২৬ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। রজত আউট হওয়ার পরে আউট হন বিরাট। শেষ পর্বে লিয়াম লিভিংস্টোন ও জিতেশ শর্মা ভাল ব্যাটিং করেন। লিভিংস্টোন ১৫ বলে ২৫ রান করেন। পাশাপাশি জিতেশ ১০ বলে ২৪ রান করেন। রোমারিও শেফার্ড ১৭ রান।
নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে আরসিবি-র স্কোর দাঁড়ায় ১৯০ রান।

পঞ্জাব বোলারদের মধ্যে জেমিসন ও আর্শদীপ সিং পেয়েছেন ৩টি করে উইকেট। এছাড়া ১টি করে উইকেট পেয়েছেন চাহাল, বিজয়কুমার ও আজমাতুল্লা। জবাবে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৮৪ রান করে পঞ্জাব। দলের হয়ে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৬১ রান করেন শশাঙ্ক সিং। এছাড়া জস ইংলিশ ৩৯ রান করেন। পাশাপাশি দুই ওপেনার প্রিশাংস আরিয়া ২৪ ও প্রভসিমরন সিং ২৬ রান। অধিনায়ক শ্রেয়স আয়ার এদিন ব্যর্থ, মাত্র ১ রান করে আউট হন।