
ওঙ্কার ডেস্ক: সন্তানহারা হয়ে গভীর অবসাদে লেখিকা তসলিমা নারসিন। পোষ্য হারানোর যন্ত্রণা নরক যন্ত্রণার সমান। পোষ্য যে কখন বাড়ির এক সদস্য হয়ে ওঠে তা যাদের বাড়িতে পোষ্য রয়েছে শুধু তারাই বোঝেন। লেখিকা তসলিমার দীর্ঘ ২২ বছরের জীবনের চড়াই উৎরাইয়ের সঙ্গী ছিল মিনু। শনিবার লেখিকার সন্তানসম পোষ্য মিনু শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করল। অসুস্থতার জন্য মিনুর ঘরেই পাকাপাকি ভাবে থাকতে শুরু করেছিলেন তসলিমা।
সম্প্রতি লেখিকার এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে দেখা যায় মিনুর গায়ের রঙ সাদা তার উপরেই রয়েছে ধূসর ছোপ। সবুজ ও নীলচে আভায় ঢেকে রয়েছে মিনুর দুই চোখ। লেখিকা আদর ও স্নেহের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন তাঁর মিনুকে। পোস্টটিতে দীর্ঘ একটি লেখার মাধ্যমে তসলিমা জানান, “বেড়ালের ২২ বছর বয়স মানুষের ১০৪ বছর বয়সের সমান। গত কয়েক বছর অসুস্থতার মধ্যে কেটেছে মিনুর। বার্ধক্যজনিত কারণে অনেক রোগই জাঁকিয়ে বসেছিল মিনুর ভিতর। বয়সের কারণেই বেশ কিছু চিকিৎসা আমি করাতে পারিনি, কারণ অস্ত্রোপচার করলে জ্ঞান নাও ফিরতে পারত মিনুর। চিকিৎসার সবরকম ব্যবস্থা আমি বাড়িতেই করেছিলাম। মাস দুয়েক আগে কোষ্ঠকাঠিন্যে ও ডিহাইড্রেশনের কারণে বমি হচ্ছিল মিনুর। যার ফলে আড়াই কিলোগ্রাম ওজন কমে গিয়েছিল। চিকিৎসার পর এখন সেই সব সমস্যা নেই। এখন সে ভালো আছে। তিন বছর তাকে আমি নিজের হাতে খাইয়ে দিয়েছি। এখন নিজেই খাচ্ছে। ভালো রয়েছে”।
লেখিকা আরও বলেন, “মিনুর জন্য ২৪ ঘণ্টা হিটার চলে। গতকাল হল এক অদ্ভুত কাণ্ড গভীর রাতে বিদ্যুৎ চলে গিয়েছিল। রেফ্রিজারেটর চলছে না, আলো নেই, পাখা নেই, ওয়াই ফাই বন্ধ অথচ তার হিটারখানা চলছে। শুধু হিটারখানাই চলছে, আর কিছু চলছে না। মিনুর প্রতি হয়ত সদয় ইলেকট্রিসিটিও।ওঁর প্রচণ্ড কষ্ট হত গলায় হাত বুলিয়ে দিলে গড় গড় আয়য়াজ করে জানান দিত ওঁর ভালো লাগছে”। অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে অবশেষে শান্তির খোঁজে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করল লেখিকার ছোট্ট মিনু।