
নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪পরগণাঃ মগরাহাটের পূর্ব গ্রাম পঞ্চায়েতের অর্জুনপুর এলাকায় উপপ্রধান পদ নিয়ে গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে শুক্রবার রাতে খুন হয়েছেন তৃণমূলের মৈমুর ঘরামী। জমি, বাড়ি বিক্রির দালালি ও অন্যান্য বেআইনি রাস্তায় প্রচুর টাকা উপার্জন করেছেন মৈমুর, বিগত পঞ্চায়েতের সদস্য হিসেবে। পঞ্চায়েতের প্রধান কে হবে, তা নিয়ে তীব্র দ্বন্দ্ব বিরোধ চলছিল তৃণমূলে ভেতর, প্রেস বিবৃতি দিয়ে এমনটাই দাবি করলেন, দক্ষিণ ২৪পরগণা সিপিএম’র জেলা সম্পাদক শমীক লাহিড়ী।
প্রেস বিবৃতিতে শমীক লাহিড়ী আরও দাবি করেছেন, উপপ্রধান পদের ৩ জন দাবীদার। যার মধ্যে একজন দাবীদার ছিলেন মৈমুর ঘরামী। ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ২৪পরগণা সিপিএম’র জেলা সম্পাদক। তাঁর দাবি, মৈমুর খুনের ঘটনায় তৃণমূলের অন্তর্কলহ ধামা চাপা দিতে, মিথ্যা মনগড়া অভিযোগ এনেছে।
প্রক্তন সিপিএম সাংসদ শমীক লাহিড়ীর আরও জানান, মৈমুরের বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন সিপিএম প্রার্থী নজরুল ফকির। সেই নজরুল সহ ৩ জন বামপন্থী কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। তাঁর আরও অভিযোগ, “তৃণমূলের সশস্ত্র দুস্কৃতি বাহিনী নিজেদের দুস্কর্ম ধামাচাপা দিতে নজরুল ফকিরের বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে, পুলিশের উপস্থিতি ও মদতে”। তিনি আওর অভিযোগ করেছেন, নির্বাচনের আগেও সিপিএম কর্মীদের থানায় তুলে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ, কারণ তাঁরা নজরুল ফকিরের হয়ে প্রচার করছিল।
সিপিএম দক্ষিণ পরগণা জেলা কমিটি প্রেস বিবৃতিতে দাবী করছে “ অবিলম্বে মনগড়া ও সাজানো অভিযোগে আটক নজরুল ফকির সহ বাম কর্মীদের মুক্তি দিতে হবে। প্রকৃত খুনীদের আড়াল না করে, দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সব বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার ও দুস্কৃতিদের গ্রেফতার করতে হবে। নজরুল ফকিরের বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে”।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাতে খুন হন মগরাহাট পূর্ব গ্রামপঞ্চায়েতের অর্জুনপুর এলাকার মৈমুর ঘরামি ৷ তিনি তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী ছিলেন ৷
গুলিকে জখম তৃণমূল নেতার এক প্রতিবেশী। তিনি ভরতি হাসপাতালে। তাঁর অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক। প্রাথমিক তদন্তে পলিশের অনুমান, সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরেই খুন হয়েছেন নেতা ৷ পাশাপাশি এর নেপথ্যে রাজনৈতিক কারণ আছে কি না সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ ৷ ইতি মধ্যে পুলিশ ৪ জন কে গ্রেফতার করেছে।
মোট ২৭টি আসনবিশিষ্ট মগরাহাট পূর্ব গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল পেয়েছে ১৩টি আসন। সিপিএম এবং বিজেপি ৬টি করে মোট ১২টি আসন নিজেদের দখলে রয়েছে। নির্দলদের ঝুলিতে রয়েছে ২টি আসন। মৈমুর ঘরামিকে উপপ্রধান করা হতে পারে বলে জল্পনা দানা বাঁধে। রাজনৈতিক কারণে খুন নাকি অন্য কিছু, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলেই খুন হয়েছেন মৈমুর ঘরামি দাবি বামেদের।