
ওঙ্কার ডেস্ক : ২৭ বছর পর দিল্লির বিধানসভার জয় পেল বিজেপি। এই নিয়ে বহুদিনের আক্ষেপ ছিল স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। ভোট প্রচারে নেমে এ কথা বলেছিলেন তিনি। অবশেষে বহুদিনের প্রত্যাশা মিটলো। দিল্লির ভোটের দিন মোদীর কুম্ভস্নান দলের কপাল ফেরালো, এমনও বলছেন কেউ কেউ। তবে দিল্লির বিধানপরিষদে না আসতে পারার আক্ষেপ এবার সুদে আসলে মিটিয়ে দিলেন দিল্লিবাসীরা। তাঁরা শুধু আম আদমিকে ক্ষমতাচ্যুত করল না, বরং বিপুল ভাবে নিয়ে এলো বিজেপিকে।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথম রাজধানী জয় মোদীর। উচ্ছ্বসিত প্রধানমন্ত্রী তাঁর প্রতিক্রিয়া টুইট করেছেন। ধন্যবাদ জানিয়েছেন দিল্লিবাসীকে। তাঁর কথায়, মানুষের আশীর্বাদ পাওয়ায় আমরা সম্মানিত। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দিল্লির উন্নয়নে তাঁরা কোনও রকম ফাঁক রাখবেন না। তাঁর কথায়, দিল্লিবাসীর জীবনযাত্রাকে আরও উন্নত করে তুলতে তাঁরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, দিল্লিও হবে ’’ ‘বিকশিত ভারত’-এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ। মোদী মনে করেন, তাঁদের কঠোর পরিশ্রম ছাড়া এই জয় সম্ভব হত না। বলেছেন, এই জয় সরকারের উন্নয়ন ও সুশাসনের ফল।
এদিকে, রাজনৈতিক মহল থেকে কথা উঠেছে, জেলে গিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছিলেন হেমন্ত সোরেন, কিন্তু পারলেন না অরবিন্দ কেজরীওয়াল! জনতার রায়ে জাতীয় রাজনীতির চ্যালেঞ্জে তাঁকে মাথা নোয়াতে হল। যদিও আম আদমি পার্টির সুপ্রিমো, ভোটের রায় মেনে নিয়ে জানিয়েছেন, তাঁরা গঠনমূলক বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবে। আপ-এর সাংবাদিক বৈঠকে হাজির ছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী আতিশী মার্লেনাও।
ভোটের আগে বিজেপি দিল্লিতে তাদের আগাম কোনো মুখ্যমন্ত্রীকে প্রজেক্ট করেনি। ফলাফল ঘোষণার পর তাই শুরু হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী পদের দৌড়। এই দৌড়ে উঠে আসছে যাঁদের নাম, তাঁরা হলেন – পারভেস ভার্মা, বীরেন্দ্র সাচদেবা, বাঁসুরি স্বরাজ, দুস্যান্ত গৌতম, মনোজ তিওয়ারি। তবে মুখ্যমন্ত্রীর ইস্যুটি নিশ্চিত ভাবে কেন্দ্রীয় কমিটির বিবেচনাধীন। আনুগত্য দেখাতে এঁরা সবাই যে যার মতো করে তুলে ধরছেন নরেন্দ্র মোদীর ক্যারিশমাকেই।
দিল্লির ভোটের প্রকৃতি দেখে বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না আপ-এর এই ধরাশায়ীর পিছনে কংগ্রেসের কোনো ফ্যাক্টার ছিল কিনা তাই নিয়ে এখন রাজধানীর ফলাফল পরবর্তী আলোচনা। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জোট হলে অন্তত কেজরীওয়াল ও মণীশ সিসৌদিয়া এ যাত্রায় বেঁচে যেতেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, কংগ্রেসের ভোট বেড়েছে ১.৬৮ শতাংশ। সেখানে আপ-এর ভোট কমেছে প্রায় ১০ শতাংশ। যেখানে বিজেপির ভোট বেড়েছে ৯.৪১ শতাংশ। ফলে ভোট যে ক্ষমতাশীন দলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে গেছে তা মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিশেষ করে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে লিকার কেলেঙ্কারি ও শিষমহল ইস্যু।