
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা : বড়বাজার হোটেলের মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করা হল ঠিকাদার খুরশিদ আলমকে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, হোটেলের ভিতরে চলছিল যে নির্মাণকাজ, সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত। এই নিয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ধৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল তিন। এর আগে হোটেলের মালিক আকাশ চাওলা ও ম্যানেজার গৌরব কাপুরকে পুলিশ হেফাজতে নেয়।
জানা গেছে,, দোতলা থেকে ছ’’তলা পর্যন্ত বিস্তৃত এই হোটেলের একাধিক ঘরে দগ্ধ দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতদের মধ্যে ১২ জনের পরিচয় শনাক্ত করা গিয়েছে। এঁদের অধিকাংশই অন্যান্য রাজ্যের শ্রমিক। ছাদে ও ছাদের কাছাকাছি দুই দেহ, সিঁড়িতে এক জন এবং বাকি দশটি দেহ হোটেলের ঘর থেকে উদ্ধার হয়।
ঘটনার পর থেকেই তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল। ১১ জনের এই বিশেষ দল হোটেল পরিদর্শন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে প্রথমে মালিক ও ম্যানেজারকে এবং পরে ঠিকাদার খুরশিদকে গ্রেফতার করল।
বুধবার রাতেই দমকল বিভাগের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। পাশাপাশি, কলকাতা পুলিশও সুয়ো মোটো মামলা রুজু করে। সেই দুই অভিযোগকে ভিত্তি করেই শুরু হয় আইনি প্রক্রিয়া।
ঘটনার গুরুত্ব বুঝে বৃহস্পতিবার সকালে হোটেল পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু ও কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ ভার্মা। ঘটনাস্থল থেকে তিনি সাধারণ নাগরিকদের আরও সচেতন থাকার পরামর্শ দেন। এর কিছু পরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও।
এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর শহরের বহুতল হোটেলগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে নিয়ে উঠেছে একাধিক প্রশ্ন। পুলিশ ও দমকল যৌথভাবে তদন্ত করে দেখছে, নির্মাণকাজ চলাকালীন কী ধরনের বিধিনিষেধ ভঙ্গ হয়েছিল এবং তা থেকেই কীভাবে এত বড়ো বিপর্যয় ঘটল।
তদন্ত চলছে। হোটেলের সমস্ত কাগজপত্র, আগুন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার বাস্তবতা ও অনুমোদনের নথি যাচাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এক তদন্তকারী অফিসার। একইসঙ্গে আরও কেউ এই ঘটনায় জড়িত কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।