
অপরূপা কাঞ্জিলাল: একদা ছোটবেলায় সকলেই রেগে যাওয়া চোখ দেখলে রক্তচক্ষু ভেবে ভয় পায়।কোন অন্যায় করে বাড়ির বড়দের রক্ত চক্ষুর ভয় শিশুকাল এ পাননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে শিশুদের থেকে বড়রাই রক্ত চক্ষুকে বেশি ভয় পেতে শুরু করেছে। আর তার কারণ এই রক্তচক্ষু আসল ভাইরাস ঘটিত এক চক্ষুরোগ যার নাম কনজাংটিভাইটিস, পিঙ্ক আই বা পাতি বাংলায় জয় বাংলা। বর্তমানে এই রোগ বেশ ভয়ানক আকার ধারণ করেছে কমবেশি রাস্তাঘাটে চলতে গিয়ে প্রায় সই এমন রক্ত চক্ষু দেখা যাচ্ছে। বাড়ির বাচ্চারা বেশিরভাগই স্কুল থেকে নিয়ে আসছে এই রোগ। তাই এই বিষয়ে আজ কথা বলব।
চোখ লাল হয়ে যাওয়া কনজাংটিভাইটিস বা ‘জয় বাংলা’র প্রধান লক্ষণ। এছাড়াও চোখ দিয়ে জল পড়া, চোখে চুলকানি হওয়া, চোখ ফুলে যাওয়া ও চোখ জ্বালা করার মতো লক্ষণ দেখলেই সতর্ক হন। অনেকের বিশ্বাস কারও ‘জয় বাংলা’ হলে তার চোখের দিকে তাকাতে নেই। তার চোখের দিকে তাকালে যে তাকিয়েছে তারও একই রোগ হতে পারে। আসলে জয় বাংলা বা পিঙ্ক আই বা কনজাংটিভাইটিস যে নামেই বলুন এই রোগ সাধারণত সংক্রমণ থেকে হয় বা কোনও অ্যালার্জি থেকে হয়। অনেকেরই ভুল ধারণা থাকে যে এতে চোখের দৃষ্টিশক্তিতে সমস্যা হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা বলে থাকে, কনজাংটিভাইটিস হলে তা দৃষ্টিশক্তির উপরে প্রভাব ফেলে না। তবে, এটি খুবই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। স্কুল, কলেজ বা বাসে-ট্রেনে-মেট্রোতে কারও হয়ে থাকলে তার সংস্পর্শে এলে এটি হতে পারে। তাই ভীষণই সাবধানতা অবলম্বন প্রয়োজন।
এতো গেলো রোগ হওয়ার কথা কিন্তু হয়ে গেলে কি করবেন আসল বিষয় তো এটাই। সেক্ষেত্রে আক্রান্ত হলে চোখে জলের ঝাপটা দিতে পারেন এ ক্ষেত্রে ব্যথায় উপশম হতে পারে।কোনও অ্যান্টিঅ্যালার্জিক আই ড্রপ ব্যবহার করা যেতে পারে তবে অবশ্যই চিকৎসকের পরামর্শ নিন।সংক্রমণ যাতে অন্যের মধ্যে না ছড়ায়, তার জন্য চোখে কিছু পরে নেওয়া উচিৎ। চোখে হাত দিয়ে এদিক-ওদিক হাত না ভালো। পাশাপাশি সংক্রমণ এড়াতেও বার বার হাতে সাবান দিয়ে ধোয়া যেতে পারে।কনজাংটিভাইটিস হলে কনট্যাক্ট লেন্স পরা থেকে বিরত থাকতে হবে। আর হ্যা আক্রান্ত হলে নিজের যত্ন নেওয়ার সাথে সাথে অবশ্যই আপনার কারনে যাতে অন্য কেও সংক্রমিত না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনে এই সময় ঘরে থাকুন অপ্রয়োজনে বাইরে বেরোবেন না। এসময় অযথা বাইরে ঘুরে আপনি জয় বাংলা ছড়িয়ে দিতে পারেন তবে বাংলা জয় করতে পারবেন না।