
নিজস্ব সংবাদদাতা, পূর্ব মেদিনীপুর: এভারেস্টের শিখরে পৌঁছে ইতিহাস গড়লেন পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক থানার মথুরি গ্রামের সন্তান লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল। পশ্চিমবঙ্গ সশস্ত্র পুলিশের তৃতীয় ব্যাটালিয়নের কনস্টেবল এবং বর্তমানে কলকাতা পুলিশের নগরপালের দেহরক্ষী পদে কর্মরত লক্ষ্মীকান্ত সোমবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ পা রাখেন পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টে।
মনোবল, সাহস আর কঠোর পরিশ্রমের নিদর্শন এই অভিযান। লক্ষ্মীকান্তর সঙ্গে ছিলেন নেপালের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পর্বতারোহী ছোনজিন আংমো, ভারতীয় পর্বতারোহী গীতা সামোতা, তেনজিং শেরপা (গেলবা) ও লাকপা শেরপা। গোটা অভিযানের পরিকল্পনা ও রূপরেখা তৈরি করেছিল ‘Pioneer Adventure’ নামক সংস্থা।
এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে শুরু হয় লক্ষ্মীকান্তর এভারেস্ট জয় যাত্রা। প্রাক-অভিযান পর্বে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের নগরপাল মনোজ বর্মা-সহ একাধিক পদস্থ আধিকারিক। সেই শুভেচ্ছা এবার রূপ নিল বাস্তব সাফল্যে।
লক্ষ্মীকান্তর এই অভাবনীয় কৃতিত্বে উৎসবে মেতে উঠেছে গোটা মথুরি গ্রাম। সোমবার সকালেই তাঁর এভারেস্ট জয়ের খবর পৌঁছনোর পর থেকেই মিষ্টি বিতরণ শুরু হয় গ্রামে। আবেগে ভাসেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
জেলা পুলিশের পক্ষ থেকেও জানানো হয় সংবর্ধনা। তাঁর বাবা-মাকে ফুল, মিষ্টি ও উত্তরীয় দিয়ে সম্মানিত করেন তমলুক মহকুমার পুলিশ আধিকারিক আবজল আবরার ও তমলুক থানার আইসি সুভাষচন্দ্র ঘোষ।
“ছেলের এমন সাফল্যে গর্ব হচ্ছে। ছোটবেলা থেকেই ওর জেদ ছিল, এবার সেটা পাহাড় চূড়োয় পৌঁছে গেল,” আনন্দে চোখ ভেজে আসে লক্ষ্মীকান্তর বাবার।
সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডলের এই অর্জন প্রমাণ করল, স্বপ্ন দেখলে আর কঠোর পরিশ্রম করলে এভারেস্টও দূর নয়। এখন গোটা রাজ্য তাঁর এই সাহসিকতা ও সাফল্যে গর্বিত।