
ওঙ্কার ডেস্ক : বছরের প্রথমার্ধে একের পর এক দুর্ঘটনায় প্রশ্নের মুখে দেশের অন্যতম বেসরকারি উড়ান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া। আমেদাবাদের মর্মান্তিক দুর্ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের মাঝ আকাশে বিপত্তি। হংকং থেকে দিল্লিগামী এয়ার ইন্ডিয়ার AI-315 বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ায় মাঝপথ থেকে ফিরে যেতে হল বিমানটিকে। যাত্রীদের অক্ষত অবস্থায় হংকংয়ে ফেরানো গেলেও গোটা ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে আন্তর্জাতিক উড়ান নিরাপত্তা নিয়ে।
সংবাদ সংস্থা এনআইএ-র খবর অনুযায়ী, বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার AI-315 বিমান নির্ধারিত সময়েই হংকং থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেয়। তবে মাঝ আকাশে চালক বুঝতে পারেন বিমানে কোনও একটি যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছে। কোনও ঝুঁকি না নিয়ে তিনি তৎক্ষণাৎ হংকং এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং বিমানটিকে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। বিমানের নিরাপদ অবতরণ হলেও, ঠিক কী ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটি হয়েছিল তা এখনও প্রকাশ করেনি এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ।
গত বৃহস্পতিবার, অহমদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এআই-১৭১ উড়ান দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ওড়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিমানটি ভেঙে পড়ে, মৃত্যু হয় ২৪১ জন যাত্রীর। ভয়াবহ সেই ট্র্যাজেডির পরেই বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার মডেল নিয়ে বিশ্বজুড়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এভিয়েশন বিশেষজ্ঞেরা অনেকেই মন্তব্য করেছিলেন ড্রিমলাইনার দীর্ঘদিন ধরেই প্রযুক্তির দিক থেকে অত্যাধুনিক হিসেবে পরিচিত। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনায় বোঝা যাচ্ছে, হয় রক্ষণাবেক্ষণে গাফিলতি হচ্ছে, নাহলে প্রযুক্তিগত ত্রুটি রয়েছে।
অহমদাবাদ দুর্ঘটনার পরেই DGCA নির্দেশ দেয়, এয়ার ইন্ডিয়ার হাতে থাকা সব বোয়িং ৭৮৭-৮ এবং ৭৮৭-৯ যানের পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা পরীক্ষা করাতে হবে। উল্লেখ্য, বর্তমানে এয়ার ইন্ডিয়ার কাছে ২৬টি ৭৮৭-৮ এবং ৭টি ৭৮৭-৯ রয়েছে। DGCA সূত্রে জানা গেছে, বিমানের নিরাপত্তা কোনওভাবেই আপোসযোগ্য নয়। সমস্ত রিপোর্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে AI-315 বিমানের ফ্লাইং সার্টিফিকেশন আপাতত স্থগিত করা হতে পারে।
পর পর দুই ঘটনায় শুধু এয়ার ইন্ডিয়া নয়, বরং বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বিমান নির্মাতা সংস্থা বোয়িং-এর উপরেও আস্থা টলছে মানুষের। এখন দেখার, তদন্তে কী উঠে আসে এবং কত দ্রুত ব্যবস্থা নেয় সংস্থা ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ।