
ওঙ্কার ডেস্ক : গুরুগ্রামের একটি নামী বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ‘ডিজিটাল ধর্ষণ’-এর শিকার হলেন বাংলার এক বিমানসেবিকা। গুরুতর অভিযোগ, আইসিইউ-র মতো সংবেদনশীল একটি স্থানে চিকিৎসা পরিষেবার আড়ালে তাঁর উপর চালানো হয় যৌন নির্যাতন। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে হাসপাতালের এক প্রযুক্তিকর্মীকে গ্রেফতার করেছে হরিয়ানা পুলিশ। অভিযুক্তের বাড়ি বিহারের মুজফ্ফরপুরে, তবে বেশ কিছু মাস ধরে তিনি গুরুগ্রামে কর্মরত ছিলেন।
জানা গিয়েছে, গুরুগ্রামের এক হোটেলের সুইমিং পুলে সাঁতার কাটার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন ৪৬ বছরের ওই বিমানসেবিকা। ট্রেনিংয়ের জন্য তিনি তখন গুরুগ্রামে ছিলেন। ৫ এপ্রিল তাঁকে ভর্তি করা হয় শহরের একটি নামকরা হাসপাতালে। দীর্ঘদিন আইসিইউ-তে চিকিৎসাধীন থাকার পর ১৩ এপ্রিল ছাড়া পান তিনি। তবে হাসপাতাল থেকে বেরোনোর পরই তিনি স্বামীর মাধ্যমে পুলিশে অভিযোগ জানান। ১৪ এপ্রিল গুরুগ্রামের থানায় তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, আইসিইউ-তে চিকিৎসাধীন থাকার সময়, যখন তিনি কথাও বলতে পারছিলেন না, সেই অবস্থায় তাঁকে যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হয়। তিনি দাবি করেন, ৬ এপ্রিল রাত ৯টা নাগাদ দুই নার্স তাঁর পোশাক পরিবর্তনের জন্য কেবিনে প্রবেশ করেন। তখনই সেখানে উপস্থিত এক পুরুষের কণ্ঠস্বর তিনি শুনতে পান, যিনি নার্সদের সঙ্গে তাঁর শারীরিক গঠনের বিবরণ নিয়ে আলোচনা করছিলেন। এরপর সেই ব্যক্তি নার্সদের উপস্থিতিতেই চাদরের তলা দিয়ে তাঁর শরীরে হাত দেন বলে অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে অভিযুক্ত প্রযুক্তিকর্মীকে শনাক্ত করা হয়। ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, মাস পাঁচেক আগে তিনি ওই হাসপাতালে চাকরি পান এবং আইসিইউ-র দায়িত্বে ছিলেন। যৌন নির্যাতনের প্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। শনিবার অভিযুক্তকে আদালতে তোলা হয়।
উল্লেখ্য, ভারতে ‘ডিজিটাল ধর্ষণ’ শব্দবন্ধটি আইনত স্বীকৃত। মহিলার শরীরের গোপন অঙ্গে আঙুল বা অন্য কোনও অবৈধ উপায়ে প্রবেশ করানো হলে, তাকে ডিজিটাল ধর্ষণ হিসেবে গণ্য করা হয়। ২০১২-র দিল্লি গণধর্ষণ কাণ্ডের পর এ সংক্রান্ত আইন আরও কড়া হয়। গুরুগ্রাম-কাণ্ডে সেই ধারাতেই পদক্ষেপ করেছে পুলিশ।
ঘটনার জেরে প্রশ্ন উঠছে, এক দিকে চিকিৎসার নামে নিরাপত্তাহীনতা, অন্য দিকে নার্সদের ভূমিকা নিয়েও। তদন্তে উঠে আসা প্রত্যেক তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।