
উজ্জ্বল হোড়, জলপাইগুড়ি : হঠাৎ করেই বন্ধ ভুটানের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ ব্যবসা. উঁচু তারের বেড়ায় বাধা পেয়ে ভেঙে পড়ছে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকার আর্থ সামাজিক ব্যবস্থা।
ইতিহাস বলে, ১৯৫২ সাল থেকে জলপাইগুড়ি জেলার নাগরাকাটা থানার অধীন ভুটান সীমান্ত যে গ্রাম জি টি ভুটানের গোপাল লাইন, এই স্থান দিয়েই চলছিল ভারত-ভুটান দু দেশের অতিসাধারণ নাগরিকদের মধ্যে সৌহার্দ্য পূর্ণ মেলামেশা থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর কেনাবেচা। তবে করোনা কালে প্রথম বন্ধ হয় ব্যবসা.
স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ ফিরোজের কথায়, ‘আমরা ভেবেছিলাম পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে. কিন্তু না, উল্টে ২০২২ সালে ভুটান সরকার প্রথমে তাদের জমিতে থাকা ভুটানি নাগরিকদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যায় এবং দীর্ঘ্য সময় ধরে দু দেশের সীমান্তে থাকা বাসের ফটকটি তুলে দিয়ে ধীরে ধীরে দশ ফুট উচ্চতার তারের বেড়া এবং প্রাচীর তুলে দেয়। সেই থেকেই বন্ধ আমাদের সঙ্গে ভুটানের নাগরিকদের মেলামেশা থেকে ব্যবসা’।
যে কারণে আজ পর্যন্ত এই জি টি ভুটান সীমান্ত গ্রামের কুড়িটি পরিবারের পাশাপাশি, নাগরাকাটা ব্লকের জি টি এবং হোপ চা বাগান সহ প্রায় সাত হাজার মানুষের আর্থ সামাজিক ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ছে প্রতিদিন।
যদিও এই প্রসঙ্গে ভুটান এবং ভারত সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা বেশ কয়েকবার সীমান্ত গ্রাম জিটি ভুটান গোপাল লাইন পরিদর্শন করে গিয়েছেন।
মহম্মদ ফিরোজ আরও বলেন, ‘ভুটান সরকারের কাছে তাঁরা এই গেট খুলে দেবার এবং ব্যাবসায়ীক লেনদেন চালু করার যে আবেদন জানিয়েছিলাম, সেটিও গ্রহণ করে জবাব দিয়েছে ভুটান সরকার। তবে আজও পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি. বৃহস্পতিবার আমরা এই ব্যাপারে বিডিও-কে স্বারকলিপি প্রদান করেছি’।
এছাড়াও স্থানীয়রা জানান, তারা প্রয়োজনে বর্তমান অবস্থান থেকে দশ মিটার সরে এসে এই স্থানে ভারত সরকারের নিরাপত্তা, কাস্টমস, সহ অন্যান্য পরিকাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করবেন। শেষ পর্যন্ত কাঁটাতারের বেড়া ভেঙে কি ফের বন্ধু হবেন দু দেশের সীমান্তের মানুষগুলো? সেটাই এখন দেখার.