
শুভম কর্মকার, বাঁকুড়া : যেন উমার গায়ে আর এক উমার আরাধনা। শ্রী শ্রী ঠাকুর রামকৃষ্ণ স্ত্রী সারদাকে জগতজননী, শক্তিরূপে আরাধনা করেছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, মা সারদা সাধারন মা নয়, সাক্ষাত দুর্গা। আর জয়রামবাটির মাতৃমন্দিরে মা সারদার ভিটেই দেবী দুর্গার আরাধনা| ভক্তদের কাছে মায়ের কোলে বসে মায়ের পুজো দেখার এ এক অনন্য অনুভুতি। নিষ্ঠা ও ভক্তির পরিবেশ থেকে উমার গাঁয়ে আর এক উমার আরাধনায় মেতে উঠেন ভক্তরা। ১০০ বছরে পদার্পন করল জয়রামবাটি মাতৃমন্দিরের দুর্গা আরাধনা।
মা সারদার প্রয়ানের পর ১৯২৩ সালে বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ স্বামী সারদানন্দজীর উদ্যোগে সারদা দেবীর দুটি বাড়িকেই অক্ষত রেখে জয়রামবাটিতে প্রতিষ্ঠা হয় মাতৃ মন্দিরের । যে বাড়িতে জন্ম হয়েছিল মা সারদার সেই বাড়িতেই তৈরি হয় মন্দির। গর্ভগৃহে রয়েছে মা সারদার মূর্তি। রয়েছে নাটমন্দিরে ভক্তদের প্রার্থনা ও প্রনামের স্থান। ১৯২৫ সালে মা সারদার জন্ম ভিটেতে এই নাটমন্দিরে দুর্গা পূজার সূচনা হয়। পরবর্তীকালে স্থানাভাবে, ১৯৩২ সাল থেকে প্রতিমা তৈরি করে জয়রামবাটি মাতৃমন্দিরে দুর্গা পূজা শুরু হয় । বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে মন্ত্র , বিধি ও তিথি নিয়মানুসারে পালন করে পূজা হয় জয়রামবাটির মাতৃমন্দিরে । অষ্টমীর দিন তিথি মেনেই সম্পন্ন হয় কুমারী পুজো।
এবার কুমারী রূপে পুজো করা হল নার্সারী-১ এর ছাত্রী ৫ বছর ৩ মাস বয়সের আরাধ্যা রায়কে। আরাধ্যার বাড়ি হুগলীর সামন্তখণ্ড এলাকায়। অষ্টমীর দিন কুমারী পূজা দেখতে হাজার হাজার ভক্ত ভিড় করেন এই মন্দিরে। আড়ম্বর নয় মা সারদার জন্ম ভিটের দুর্গা পূজার মূল বিষয়বস্তু ভাব ও নিষ্ঠা । এই দুই বিষয় বজায় রেখে বছরের পর বছর ধরে দুর্গা পূজা হয়ে আসছে জয়রামবাটিতে। আর সেই পুজোতে এসে আলাদা অনুভূতি এক অনন্য তৃপ্তি পান ভক্তরা।