
ওঙ্কার ডেস্ক : পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি নাশকতা নিয়ে দিল্লির হুঁশিয়ারির পরও জঙ্গি তৎপরতায় ভাটা পড়ল না। গতকালই কুলগ্রামে জঙ্গি ও নিরাপত্তারক্ষীদের মধ্যে ব্যাপক গুলি চলল। এরপরও বৃহসস্পতিবার সকাল থেকে উধমপুর জেলার বসন্তগড় এলাকাতেও জঙ্গী ও নিরাপত্তারক্ষীদের মধ্যে শুরু হয়েছে এনকাউন্টার। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুধু-বসন্তগড় অঞ্চলে এই গুলি বিনিময় চলছে। সূত্রের খবর, গুলির লড়াইয়ে শহিদ হয়েছেন এক সেনা।
জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র, পহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় গুলি চালিয়ে ২৬ জন পর্যটককে হত্যা করেছে লস্কর-সমর্থিত জঙ্গিরা। নিহতদের মধ্যে ২৫ জন ভারতীয় এবং একজন নেপালের নাগরিক। এই হামলায় আরও অনেকেই আহত হয়েছেন। এর পর থেকেই উপত্যকার আনাচকানাচে শুরু হয়েছে তল্লাশি, চলছে দফায় দফায় এনকাউন্টার। তাতেই এবার প্রাণ গেল এক সেনার। জবাব দিতে জোরদার গুলি চালনা শুরু করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
ভারতের ‘মিনি সুইজারল্যান্ড’ বৈসরন। যে কোনো ভ্রমণ পিপাসু মানুষের কাছে একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র নামে পরিচিত। এখান থেকেই শুরু হয় অমরনাথ যাত্রার পথ। তাই এত জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় হামলা চালিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়াই সন্ত্রাসবাদীদের উদ্দেশ্য ছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
পহেলগামে ওই হামলার ২৪ ঘণ্টা পরই, বুধবার দুপুরে গুলির লড়াই শুরু দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগামে। জঙ্গিরা লুকিয়ে আছে, এমন খবর পেয়ে কুলগামের তংমার্গ এলাকায় গুলি চালান নিরাপত্তারক্ষীরা। তার আগেই, বুধবার, দিল্লির একটি অনুষ্ঠানমঞ্চ থেকে দেখে নেওয়ার হুঙ্কার দিয়েছিলেন দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। কাউকে রেয়াত করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন রাজনাথ। এমন কি কিছুক্ষণের মধ্যে ফল পাবে পাকিস্তান, এমন হুঁশিয়ারির কয়েকঘণ্টা পরই এবার পদক্ষেপ করেন নিরাপত্তারক্ষীরা। এর পরে বুধবার সন্ধেয় উচ্চপর্যায়ের বৈঠকও করেন প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী-সহ কর্তারা।
তার পরেই আজ, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফের শুরু ‘অ্যাকশন’। বস্তুত, পহেলগামের ঘটনায় গোটা কাশ্মীর জুড়ে নিরাপত্তা বাহিনী সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। বুধবার রাতেই পুঞ্চ জেলার মেন্ধারে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ্য করে ভারতীয় সেনাবাহিনী। সঙ্গে সঙ্গে গুলি চালনা শুরু হয়। প্রতিরক্ষা সূত্রের খবর, পোস্টে মোতায়েন এক সেনা জওয়ানের তৎপরতায় অনুপ্রবেশকারীদের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
অন্যদিকে, বারামুল্লা জেলাতেও বুধবার বড় ধরনের অনুপ্রবেশ রুখে দেয় সেনাবাহিনী। সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, সেখানে দুই জন সন্ত্রাসবাদীকে হত্যাও করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দুটি অ্যাসল্ট রাইফেল, প্রচুর গুলি, পিস্তল, ওয়ার-লাইক স্টোরস এবং একটি ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস যা যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়। এই ঘটনার পর কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নিরাপত্তা সংস্থাগুলো সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। জম্মু-কাশ্মীর জুড়ে সেনা টহল বাড়ানো হয়েছে এবং সম্ভাব্য অনুপ্রবেশ পথগুলোতে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।