
দেবপ্রসাদ অধিকারী : কলকাতা : ২৯ তম কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছিল চাঁদের হাট। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করলেও সবার নজর ছিল বোম্বে থেকে আগত অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা, শত্রুঘ্ন তনয়া অভিনেত্রী সোনাক্ষী সিনহা পরিচালক মহেশ ভাট, অভিনেতা সালমান খান, অভিনেতা অনিল কাপুরের দিকে।

মঙ্গলবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শত্রুঘ্ন সিনহা কিছুটা আবেগ আপ্লুত ছিলেন, তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নিয়ে অনেক সময়ই বোম্বের বিখ্যাত অভিনেতা অভিনেত্রী বন্ধুরা ব্যঙ্গ করেছেন বিভিন্ন সময়। অনেকেই বলেছেন তার এই অভিনয় ক্যারিয়ার রেখে কেন রাজনীতির ময়দানে যোগদান করছেন তিনি। উপরন্তু একটি আঞ্চলিক দলে যোগদান নিয়েও শুনতে হয়েছে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মন্তব্য। তিনি এও বলেন যে সেই মন্তব্যে তিনি বিচলিত হননি কখনো। কখনো তার সিদ্ধান্তকে বদল করার চিন্তা ভাবনা করাতে পারেনি কেউ।তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়ে যা পেয়েছেন তা আগে কখনো পাননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেত্রীর কাছ থেকে তিনি যা পেয়েছেন তা অতুলনীয় এবং ভোলবার নয়। তিনি এও বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেত্রী ভারতবর্ষে নেই। জাত পাতের বিরুদ্ধে যদি কেউ লড়াই করে থাকেন সে হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারত বর্ষকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। তিনি যে ‘বিহারীবাবু’ নামে পরিচিত সেটিও উল্লেখ করতে ভোলেন নি। বাংলা তাকে অনেক কিছু দিয়েছেন যা অন্য রাজ্য দেয়নি । সোনাক্ষী সিনহা তখন মঞ্চে শত্রুঘ্ন সিনহার পাশে দাঁড়িয়ে তনয়াকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, বাংলা একটা এমন রাজ্য যেখানে সংস্কৃতিতে ভরপুর এখানে মানুষ ভালোবাসতে জানে, এখানে মানুষ নিঃস্বার্থভাবে দান করতে পারে। তিনি এও বলেন, একদল মানুষ ধর্মের ভিত্তিতে দেশকে বিভক্ত করতে চাইছে। তাদের প্রতিবাদ করার জন্যই তার রাজনীতিতে আসা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত নেত্রীর সহচর্য আমি পেয়েছি তাই আরো কিছু করতে চাই। কোন ভয়ই আমাকে দমিয়ে দিতে পারবে না। সোনাক্ষী কে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন বাংলার জন্য যদি সম্ভব হয় কিছু কর। এদিন তিনি আরো বলেন, যারা দেশকে নিয়ে এ ধরনের জাতিভেদের রাজনীতি করছে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই চলছে আবহমান চলবে।

কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে চাঁদের হাট থাকলেও কিছু অপূর্ণতা থেকেছে বলে মনে করেছেন মঞ্চে থাকা শিল্পীরাই । সালমান খান এ দিন মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অপর্ণা সেনের নাম উল্লেখ করেন। যদিও তাৎক্ষণিক ভাবে অপর্ণা সেন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন না। সাময়িকভাবে কিছুটা হলেও অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়তে হয়েছিল চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজকদের। সালমান খান যদিও মঞ্চে উঠেই বলেছিলেন আমার যা বলার আগের বক্তারা সব বলে গেছেন। দর্শকদের অনুরোধে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি স্মৃতি রোমন্থন করেছেন বাংলা সিনেমার বিখ্যাত পরিচালক প্রযোজকদের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুরোধে তিনি বাংলায় বারবার আসার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। একইসঙ্গে চলচ্চিত্র উৎসবের থিম সং-এর সঙ্গে পা মিলিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সোনাক্ষী সিনহা, সালমান খা্ অনিল কাপুর সহ আরও অনেকে।

অনিল কাপুর বক্তব্য রাখতেএ,গিয়ে তিনিও কিছুটা আবেগ আপ্লুত ছিল বাংলাকে নিয়ে। তিনি বলেন বাংলা অনেক কিছু দিয়েছে তাকে। প্রথম সিনেমা তার বাংলায় শুটিং হয়েছিল।
এদিন সোনাক্ষী সিনহা ও বাংলার প্রশংসায় ছিলেন পঞ্চমুখ। তিনি বলেন প্রথম যে সিনেমাটি তার হিট করেছিল সেই সিনেমাটিতে তার চরিত্র ছিল একটি বাঙালি নারীর। আজকের যে সোনাক্ষী সিনহা হিসেবে পরিচিত সেই চরিত্রটির কারণেই। সেই চরিত্রটিতে অভিনয় না করলে হয়তো সোনাক্ষী সিনহা এত মানুষের ভালবাসাই পেত না । সে কারণে বাংলাকে ও বাঙালিকে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি সোনাক্ষী সিনহা।