
অমিত কুমার দাস, কলকাতা: কামদুনি গণধর্ষণ এবং হত্যাকাণ্ডের দশ বছর পার। ২০১৩ সালের ৭ জুন হওয়া নৃশংস ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিরোনামে উঠে এসেছিল উত্তর ২৪ পরগনার কামদুনি। অবশেষে কামদুনি রায় ঘোষণায় আমৃত্যু কারাদণ্ড দিল উচ্চ আদালত। দোষী সাব্যস্ত সইফুল আলী মোল্লা ও আনসার আলী মোল্লা। দুই অভিযুক্তকেই আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি।
অন্যদিকে সাজা হয়েছিল আমিন আলী। তবে তাকে বেকসুর ছাড়া দেওয়া হয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পরিবর্তে ছাড়া পেল ইমানুল হক, ভোলানাথ নস্কর ও আমিনুর ইসলাম।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ৭ জুন পরীক্ষা দিয়ে কামদুনির বাড়িতে ফিরছিলেন রাজারহাট ডিরোজিও কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। অভিযোগ, বাস থেকে নেমে হেঁটে বাড়ি ফেরার পথে তাঁকে রাস্তা থেকে জোর করে পাঁচিল ঘেরা একটি ঘরে নিয়ে যায় ন’জন দুষ্কৃতী। সেখানেই দফায় দফায় চলে গণধর্ষণ। এমনকী নির্যাতনের পরে ছাত্রীটিকে ভেড়িতে ফেলে যায় দুষ্কৃতীরা। এদিকে বাড়ির মেয়ের খোঁজে এলাকার লোকজনকে নিয়ে বেরিয়ে গ্রাম থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে ৮ বিঘে ভেড়ি অঞ্চলে একটি পাঁচিলের পাশে রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় ছাত্রীর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরা।
এই ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে ধিক্কার-আন্দোলন শুরু হয়। রাজ্য পুলিশের কাছ থেকে তদন্তভার তুলে দেওয়া হয় সিআইডির হাতে। তদন্তভার হাতে নিয়ে সিআইডি অভিযুক্ত ৮ জনকে গ্রেফতার করে। সেই মামলায় ২০১৬ সালে ৬ জন অভিযুক্তর সাজা ঘোষণা করেছিল কলকাতা নগর দায়রা আদালত। দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল সইফুল আলি মোল্লা, আনসার আলি মোল্লা, আমিন আলি, ইমানুল হক, ভোলানাথ নস্কর ও আমিনুল ইসলাম। সইফুল, আনসার ও আমিনকে ফাঁসির সাজা দিয়েছিল কলকাতা নগর দায়রা আদালত। বাকি ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল।
দোষী সাব্যস্তদের সাজা মকুবের জন্য কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানানো হয়। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলা উঠেছিল। বিগত প্রায় পাঁচ মাস ধরে চলছিল শুনানি। শুক্রবার এই রায় আদালতের।