
বিপ্লব দাশ : কলকাতায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে প্রতিবারই গেল গেল রব ওঠে। এই শোরগোল অতীতেও উঠেছে, এখনও উঠছে। কিন্তু প্রতিবারই তা থেমে যায় অগ্নিকাণ্ডের উত্তাপ নিভতে না নিভতেই। বড়বাজারের মেছুয়া বাজারে যে মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটল, অকালে চলে গেল এতগুলি প্রাণ তা নিশ্চয়ই হৃদয় বিদারক। যে কোনো মৃত্যুই আমাদের কাছে অসহনীয়। কিন্তু এই ধরণের অগ্নিকাণ্ড ঘিরে যে দোষারোপ, পালটা দোষারোপ নিয়ে শহরের বিদগ্ধ নাগরিকরা কিংবা অগ্নিবিশারদরা যে সব যুক্তি তক্কে বাজার আরও গরম করেন তা এত তাড়াতাড়ি নিভে যায় কেন ? কলকাতার জতুগৃহে তাঁদের উত্তাপের স্মৃতি কি এতই দুর্বল ?
বড়বাজারের অগ্নিকাণ্ডের পর নড়ে চড়ে বসেছে প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রীর তৎপরতায় রাতারাতি কলকাতা পুরসভা নাগরিক বিপর্যয় রোধে ব্রতি হয়েছে। দেরীতে হলেও তা প্রশংশনীয়। তবু প্রশ্ন, এইসব বে-আইনি জতুগৃহ কার মদতে হয়েছে, এর পিছনে কি কোনো লেনদেন কাজ করেছিল, তা করলে কারা করেছিল এসব। যা সবসময়ই কৌতুহল উদ্দীপকের কাজ করে। এবং থিতিয়েও পড়ে। তাই এসব না ঘেঁটে পুনরায় এমন অভিশাপ যাতে না নেমে আসে নাগরিক জীবনে, সেদিকে নজর দেওয়াই কল্যাণের। তবে এক্ষেত্রে একটা কথা বারবার খোঁচা দিচ্ছে, যে ভাবে এতগুলি প্রাণ চলে যাওয়ার পর কলকাতা পুরসভা ও কলকাতা পুলিশ এবং দমকল দৌড়োতে শুরু করেছে তা যদি আগে দেখা যেত তাহলে বোধ হয় এমন একটা মর্মান্তিক ঘটনার সম্মুখীন হতাম না আমরা। কারণ, এঁদের কাছে যে কলকাতার জতুগৃহের নাড়িনক্ষত্র রয়েছে তা এখন বুঝতে অসুবিধা হয় না। তবে শুধু কয়েকটা রুফটপ রেস্তোঁরা ভেঙে দায় সারা যাবে না। এখনও শহর জুড়ে ওঁৎ পেতে আছে বহু অগ্নি-অসুর। তাদের বদ করতেই হবে। আর এখানেই লুকিয়ে আছে সরষের মধ্যে ভূতের লীলা। মুখ্যমন্ত্রী কি এদিকে এবার নজর দেবেন ?