
সাহানা বসু: কীরে বুড়ো, তোর কটা হল, আবে পারবি না ভোলার সঙ্গে কেউ পারে না। না পাড়া দখলের রাজনৈতিক নেতাদের দুই মস্তানের চ্যালেঞ্জ নয় এটা। পেটের লড়াইয়ের প্রতিযোগিতাকে এত স্পোর্টিংলি নেওয়া হয়তো আজকালরা এলিট সমাজ ভাবতেই পারে না। আসলে প্রতিমা জলে পড়লেই শুরু হয় ওদের দৌড়, ওদের সাঁতার। সেসময় ওরা সবাই কোনি, ওরা নিজেরা নিজেদের বলে ফাইট বুড়ো ফাইট,ফাইট ভোলা ফাইট। আজ বিজয়া দশমী। মন ভারাক্রান্ত আমজনতার। সেইসঙ্গে বিষাদের সুর পুজোমন্ডপেও।মা ফিরবেন কৈলাসে। আবারো অপেক্ষা এক বছরের। নদীপাড়ে নিরঞ্জনে কিন্তু এখন খুশির আমেজ, পেটের লড়াই কিন্তু তাতে যে জিতলো আর যে হারলো সবাই জয়ী,পরাজিতকে বর্জন করা, কারণ ভাসানের পরেই তো শুরু হয় নদীর বুক থেকে প্রতিমার কাঠামো সংগ্রহের কাজ। এই কচিকাঁচারা সারা বছর ,বছরের এই একটা দিনের অপেক্ষাতেই থাকে। আর বিজয়া দশমীতে যখন সবাই বলে-আসছে বছর আবার হবে তখন নদীর বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে এই দামালরা, কলকাতা পুর এলাকায় এখন সে সুযোগ না থাকলেও নদীমাতৃক পশ্চিমবঙ্গে অন্য জায়গায় আছে এখনও। তারপর কুমোর জেঠুর কাছে দিলে ওই দুগ্গা কাঠামোতে তৈরি লক্ষ্মী,কালী,জগদ্ধাত্রী। পুরোনো কাঠামোতে মাটি পড়বে, মাটি তখন হয়ে যায় মায়া, মহামায়া তার বিভিন্ন রূপে সেজে উঠবে, শুরু হবে আরাধনা,জ্বলবে প্রদীপ, আর সেই প্রদীপের পিলসুজ হয়েই থাকবে,বুড়ো,ভোলা,স্বপনরা।