
স্পোর্টস ডেস্ক : চেন্নাইয়ান এফসি ম্যাচে হারের পরে শনিবারেপাঞ্জাব এফসির বিরুদ্ধে নামছে মোহনবাগান। আর এই ম্যাচেও অনিশ্চিত মোহনবাগান কোচ অ্যান্তোনিও লোপেজ হাবাস। বাইপাসের ধারে যে পাঁচতারা হোটেলে তিনি থাকেন এখন সেখানেই রয়েছেন। শুক্রবারও অনুশীলনে এবং সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি ছিলেন না তার জায়গায় শুক্রবার কোচিং করিয়েছেন ম্যানুয়েল পেরেজ। এখনও সুস্থ হননি বাগান কোচ। ফলে পাঞ্জাব ম্যাচে পেরেজই কোচিং করাবেন। শুধু হাবাস নন, আব্দুল সাহাল, কিয়ান নাসিরিও খেলবেন না চোটের কারণে।
হাবাস না থাকায় সমর্থকদের মতই দুঃখিত ম্যানুয়েল পেরেজ নিজেও। বেশ গোমড়া মুখেই বললেন, “তিনি এখন আগের থেকে ভালো আছেন। ডাক্তারের নির্দেশ মেনে চলছেন। আগামীকাল ডাক্তার অনুমতি দিলে তিনি দিল্লি যাবেন।”
হাবাস আসার পর পাঞ্জাব এফসির সঙ্গে এটাই প্রথম সাক্ষাৎ। ঘরের মাঠে চেন্নাইন এফসির কাছে হারের পর এই ম্যাচ আরও বেশি কঠিন হয়ে উঠেছে মেরিনার্সদের কাছে। পঞ্জাব এফসির সম্পর্কে ম্যানুয়েল জানিয়েছেন, “পাঞ্জাব ভালো দল। ওরা এখন ভালো পজিশনে আছে। আমাদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে।”
ম্যানুয়েল পাঞ্জাবকে সমীহ করলেও অধিনায়ক শুভাশিস বোস কিন্তু নিজের দল নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। তিনি জানালেন, “দলের পরিবেশ এখন খুব ভালো। গত ম্যাচের ফলাফল আমাদের পক্ষে যায়নি। তাই বাকি তিনটে ম্যাচ আমাদের পরপর জিততে হবে। আমরা জিতব। জিতে আমরা লিগ শিল্ড পাব। মোহনবাগান ক্লাব ট্রফি ছাড়া কিছু বোঝে না। এই ক্লাবে খেলতে হলে ট্রফি জিততেই হবে। আর আমরা এবারেও ট্রফি জিতব। গরম ভারতের সব জায়গায় বেড়েছে। অসুবিধে অবশ্যই হচ্ছে। তাই আমরা সকালে গরমের মধ্যে অনুশীলন করে অভ্যেস তৈরি করছি। তাছাড়া শুধু আমাদের নয়, প্রতিপক্ষ দলও তো এই গরমে খেলবে। তাই গরম আবহাওয়াকে অজুহাত বানাতে চাই না।আমাদের হেড কোচ হাবাস দলের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ। উনিই দলকে নিয়ন্ত্রণ করেন। কৌশল, ফরমেশন থেকে শুরু করে সব কিছুই উনি দেখেন। ওঁর ভূমিকা দলের জন্য অপরিহার্য্য। উনি এখন অসুস্থ। আশা করি, তাড়াতাড়ি ফিট হয়ে যাবেন। তবে আমরা যেহেতু পেশাদার খেলোয়াড়, তাই দল সমস্যায় পড়লে ঘুরে দাঁড়ানো আমাদের কর্তব্য। দলকে জেতানোর দায়িত্ব নিতে হবে সবাইকে”।হাবাস দলের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ। উনিই দলকে নিয়ন্ত্রণ করেন। কৌশল, ফরমেশন থেকে শুরু করে সব কিছুই উনি দেখেন। ওঁর ভূমিকা দলের জন্য অপরিহার্য্য। উনি এখন অসুস্থ। আশা করি, তাড়াতাড়ি ফিট হয়ে যাবেন। তবে আমরা যেহেতু পেশাদার খেলোয়াড়, তাই দল সমস্যায় পড়লে ঘুরে দাঁড়ানো আমাদের কর্তব্য। দলকে জেতানোর দায়িত্ব নিতে হবে সবাইকে”।
শুধু হাবাস নন, নেই-এর তালিকায় রয়েছেন নির্ভরযোগ্য উইঙ্গার সহাল আব্দুল সামাদও। জনি কাউকো ও দীপক টাঙরিও গত ম্যাচের শেষ দিকে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন। তাঁরা এই ম্যাচে খেলবেন বলে জানা গেলেও সহাল যে খেলবেন না, তা জানিয়ে দিলেন সহকারী কোচ মানুয়েল পেরেজ।
তবে শুভাশিস মনে করেন, “এই মরশুমে অনেক ম্যাচে অনেক খেলোয়াড়ই ছিল না, চোট ছিল। অনেকেই অনেকের জায়গায় এসে খেলেছে, যেমন আনোয়ারের জায়গায় দীপ্পেন্দু এসে খেলেছে, তখনও আমরা জিতেছি। আমাদের যে কোনও খেলোয়াড় মাঠে নামলে নিজেদের সেরাটা দেয়। এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। প্রত্যেকেই দলকে জেতাতে চেষ্টা করে। আমরা কালও সবাই মিলে দলকে জেতানোর চেষ্টা করব। জানি, হাবাসের ভূমিকা ও প্রভাব এই দলে অনেক বেশি। উনি নেই, সহালও নেই। কিন্তু যারা খেলবে, তারা নিজেদের সেরাটা দিয়ে দলকে জিততে সাহায্য করবে”।
লিগের শেষ তিন ম্যাচে জিততেই হবে মোহনবাগানকে, এমনই পরিস্থিতির মধ্যে শনিবার দিল্লির জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে নামছে তারা। দিল্লির গরমে ম্যাচ বিকেল পাঁচটা থেকে। বাকি তিন ম্যাচ নয়, আপাতত এই ম্যাচেই মনোনিবেশ করেছে সবুজ-মেরুন বাহিনী।
দলনেতা শুভাশিস বলছেন, “ভারতে সব জায়গাতেই গরম ক্রমশ বাড়ছে। এই পরিস্থিতির সঙ্গে আমাদের মানিয়ে নিতে হবে। সে জন্য আজ আমরা সকালে গরমের মধ্যেই অনুশীলন করেছি। আশা করি, দলের সকলেই মানিয়ে নেবে ও পরের ম্যাচে হয়তো আমরা বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়ব না, ভাল খেলব। এ রকম পরিস্থিতিতে মানসিক ভাবে দৃঢ় থাকা জরুরি। আশা করি, আমাদের ছেলেরা পারবে”।
এ রকম পরিস্থিতিতে মোহনবাগান আগেও পড়েছে বলে মনে করিয়ে দিয়ে শুভাশিস বলেন, “মোহনবাগানের মতো ক্লাবে খেলতে গেলে ফুটবলারদের চাপ নেওয়ার মানসিকতা ও ক্ষমতা থাকতে হয়। ট্রফি ছাড়া এই ক্লাব কিছু ভাবতে পারে না। আশা করি এ বছরও ট্রফি আসবে দলের পরিবেশ যথেষ্ট ভাল আছে। এখন আমাদের বাকি তিনটি ম্যাচই জিততে হবে। আমাদের খেলোয়াড়রা প্রতি ম্যাচেই জেতার মানসিকতা নিয়ে নামে। পরের ম্যাচগুলোতেও সেটাই থাকবে”।
গত ম্যাচে চেন্নাইনের কাছে হার ভুলে এখন সামনের দিকে তাকিয়ে তারা। শুভাশিস বলেন, “দলের প্রত্যেক ম্যাচেই নিজেদের সেরাটা দিয়েছে সবাই। তবে গত ম্যাচে জিততে পারিনি। এখন বাকি তিনটি ম্যাচেই জিততে হবে আমাদের। এটাই এখন লক্ষ্য আমাদের। আপাতত কালকের পাঞ্জাব ম্যাচটাতেই মনোনিবেশ করছি আমরা। তার পরে ঠিক করব আমাদের কী করতে হবে”।
কোচ অসুস্থ, নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড়ের চোট তো আছেই। এ ছাড়াও শনিবারের ম্যাচে দিল্লির গ্যালারিতে সমর্থকেরা থাকবেন না, যা তাদের উজ্জীবিত করে তোলার ক্ষেত্রে খুবই জরুরি ছিল। এই প্রসঙ্গে শুভাশিস বলেন, “সমর্থকেরা আমাদের পক্ষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ৭০-৮০ মিনিটের পর আমরা ক্লান্ত হয়ে গেলে সমর্থকদের চিৎকারেই আমরা ফের চাঙ্গা হয়ে যাই। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, কাল সমর্থকদের গ্যালারিতে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবু পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে ভাল খেলতে হবে আমাদের”।