
ওঙ্কার ডেস্ক : প্রাক্তন রাষ্ট্রসংঘের সহকারী মহাসচিব লক্ষ্মী পুরীর করা মানহানির মামলায় ফের বড় ধাক্কা তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলের। আদালতের আগের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দিল দিল্লি হাইকোর্ট। ফলে বহাল থাকল আদালতের পূর্ববর্তী নির্দেশ— ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং প্রকাশ্যে সামাজিক মাধ্যমে ক্ষমা চাইতে হবে গোখলেকে।
শুক্রবার বিচারপতি পুরুষেন্দ্র কুমার কৌরব জানান, হাইকোর্টের ২০২৩ সালের ১ জুলাইয়ের রায় পুনর্বিবেচনার জন্য যে আবেদন জমা পড়েছে, তা “অতি দেরিতে” করা হয়েছে এবং আইনি গ্রহণযোগ্যতা নেই। সেই কারণেই আবেদনটি খারিজ করা হল।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে সাকেত গোখলে তাঁর এক্স (প্রাক্তন টুইটার) অ্যাকাউন্টে একাধিক পোস্টে লক্ষ্মী পুরী ও তাঁর স্বামী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরীর সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি অভিযোগ করেন, সুইজারল্যান্ডে তাঁদের একটি প্রপার্টি ক্রয় সন্দেহজনক এবং তাতে তদন্ত হওয়া উচিত। এই পোস্টগুলিকেই ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, মিথ্যা এবং সম্মানহানিকর’ বলে মন্তব্য করে আদালত।
হাইকোর্ট তার এক্স পার্টি রায়ে নির্দেশ দেয়— গোখলেকে সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে ও তাঁর এক্স অ্যাকাউন্টে ৬ মাস ধরে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে হবে। পাশাপাশি দিতে হবে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ। কিন্তু সে নির্দেশ মানেননি গোখলে। ফলে আদালতের অবমাননার মামলা করেন লক্ষ্মী পুরী।
এই আবেদনের ভিত্তিতে আদালত জানায়, গোখলের সম্পত্তি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও আর্থিক বিবরণী দিতে হবে। এরই সঙ্গে বিচারপতি মনমিত প্রীতম সিং অরোরা আদেশ দেন, সাংসদ হিসেবে গোখলের বেতন বাজেয়াপ্ত করে প্রতি মাসে ১.৯ লক্ষ টাকা করে কেটে নেওয়া হবে, যতদিন না ৫০ লক্ষ টাকা পুরোপুরি আদায় হয়।
আদালত তার পর্যবেক্ষণে উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের ওথেলো নাটকের একটি উদ্ধৃতি টেনে বলেন, “অভিযোগটি ছিল ভিত্তিহীন, সন্দেহপ্রবণ ও সম্মানহানিকর— যা মানহানির সমান।”
এই মামলার পরবর্তী শুনানি নির্ধারিত হয়েছে ২৮ মে।
তৃণমূল সাংসদের এই মামলায় রাজনৈতিক মহলেও চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে — আদালতের কড়া বার্তার পরে কি নিজের অবস্থানে বদল আনবেন গোখলে? নাকি মামলা আরও দীর্ঘায়িত হবে আইনি পথে?