
ওঙ্কার অনলাইন ডেস্ক : ২০২৩-এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায় জেলায় বিজেপি সেভাবে রুখে দাঁড়াতে না পারলেও, পূর্ব মেদিনীপুরে শুভেন্দু অধিকারী একাই লড়ে গিয়েছেন। অন্যান্য জায়গায় জেলা পরিষদে বিজেপি যেখানে কার্যত দাঁড়াতেই পারেনি সেখানে পূর্ব মেদিনীপুরের শুভেন্দু অধিকারী জেলা পরিষদে ১৯টি আসন দখল করেছেন।
বিজেপির অন্দরমহলের খবর, শুভেন্দু বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মতিগতি সম্পর্কে ভিতরে ভিতরে সন্দিহান। সোজাসাপ্টা ভাবে বললে শুভেন্দু অধিকারীর ব্যক্তিগত ধারণা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যদি বিজেপির সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছে যান, তাহলে তৃণমূলের সঙ্গে টিম মোদির কোন গোপন বোঝাপড়া হয়ে যাওয়া অসম্ভব নয়। সিপিএম ও কংগ্রেস শিবির থেকে ইতিমধ্যে প্রকাশ্যেই ইঙ্গিত দেয়া হচ্ছে, মহারাষ্ট্র মডেলে এখানেও “ভাইপো”র সন্ধান চলছে।
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ওপর রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করবার উদ্দেশ্যে শুভেন্দু অধিকারী ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে বলেছেন, আমার একমাত্র লক্ষ্য মমতা ব্যানার্জিকে বাংলার মসনদ থেকে সরানো। তিনি এটাও বলেছেন, প্রয়োজনে দলীয় পতাকা সরিয়ে রেখে বৃহত্তর জোট গঠন করতে হবে।
রাজনীতির মারপ্যাঁচ বোঝা লোকজনের বক্তব্য, শুভেন্দুর এটা কথার কথা নয়। দিল্লি নেতৃত্বকে শুভেন্দু মমতার বিরুদ্ধে আপোষহীন লড়াই এর পথে রাখতে চান বলেই বারবার বলে যাচ্ছেন দিল্লি কি করবে জানিনা। আমি মমতার বিরুদ্ধে আমার লড়াই চালিয়ে যাব।
কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে বিরোধী রাজনীতির পরিসরে সিপিএম কংগ্রেস নতুন করে উঠে আসতেই আর এস এস শিবির সক্রিয় উঠেছে। আরএসএস আগেই জানিয়ে দিয়েছে, রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় থাকলেও অসুবিধা নেই। কিন্তু
কোনভাবেই যেন বাম-কংগ্রেস ক্ষমতায় না উঠে আসে।
এই দোলাচল পরিস্থিতিতে শুভেন্দু অধিকারী শিবিরের আশঙ্কা মোদি-অমিত শাহরা ২০২৪-এ যদি মনে করেন পশ্চিমবাংলায় বিজেপি আশানুরূপ ফল করতে পারবেনা, তাহলে মমতার সঙ্গে বিজেপি নতুন করে সমঝোতায় যেতে পারে। বিনিময়ে মমতা ব্যানার্জিরা, রাহুল, তেজস্বী, নীতিশ, ইয়েচুরিদের, ফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে গিয়ে আগামী লোকসভা নির্বাচনের মুখে একটা তৃতীয় ফ্রন্ট খাড়া করে দেবেন।
শুভেন্দুর পক্ষে কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতায় থাকলে চট করে বিজেপি ছাড়া সম্ভব নয়। কারণ সারদা নারোদার মত মামলাগুলো এখনও আদালতে ঝুলছে। যে কোন সময় ওই দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলাগুলো শুভেন্দুর মাথাব্যাথার কারন হয়ে উঠতে পারে।
কিন্তু যদি দেখা যায়, রাজ্যে মমতার সঙ্গে কংগ্রেস-বাম কোন নির্বাচনী সমঝোতা করলো না এবং লোকসভা নির্বাচনে মোদী বিরোধী ফ্রন্ট দিল্লিতে ক্ষমতায় চলে এলো, সেক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারীর কংগ্রেসে ফেরত যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
কারণ তখন কেন্দ্রীয় ক্ষমতা কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রনে থাকবে। আর মনে রাখতে হবে তৃণমূল তৈরি হওয়ার অনেক পরে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে এসেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কংগ্রেসের সঙ্গে তার পুরনো একটা সক্ষতা রয়েছ্তা।
যদি এরকম ঘটে তাহলে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ২০২৬ সালের নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে শুভেন্দু অধিকারী অধীর চৌধুরী মহম্মদ সেলিমদের জোটের অন্যতম সম্ভাবনা দেখা দেবে।