
বৃহস্পতিবার বিকেলে অবশেষে অবসরকালীন আদালতে পেশ করা হল ত্রিধারার বিক্ষোভকারীদের। অভিযুক্তদের নামের তালিকা প্রকাশ করল পুলিশ। দীর্ঘ বাক বিতণ্ডার পর ৯জনকেই ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠালো আদালত।
বুধবার ত্রিধারা সম্মীলনীর মন্ডপে ঢোকার রাস্তায় ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দিচ্ছিলেন জনা চল্লিশেক ছাত্র যুব। রাতারাতি পুলিশ আটক করেন ২৯ জনকে। প্রথমে তাদের রবীন্দ্র সরোবর থানা এবং পরে লালবাজার থানায় নিয়ে যাওয়া হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয় ধর্মতলা সহ লালবাজার সংলগ্ন রাজপথে। বিক্ষোভের জেরে ২০জন ছাড়া পেলেও গ্রেফতার করা হয় ৯জনকে। এই নয়জন হলেন, আসানসোলের কুলটির বাসিন্দা সুজয় মন্ডল (২০), দমদমের উত্তরণ সাহা রায় (১৮), ট্যাংরার কুশল কর (২৭), নরেন্দ্রপুরের জহর সরকার (২৯) এবং সাগ্নিক মুখোপাধ্যায় (২৬), পূর্ব বর্ধমানের নাদিম হাজারি (২০), হাসনাবাদের ঋতব্রত মল্লিক (২০), খড়দহের চন্দ্রচূড় চৌধুরী (২০), রহড়ার দৃপ্তমান ঘোষ (২০)।আজ বিকাল ৫টা নাগাদ তাদের আলিপুর আদালতে পেশ করা হয়।
আদালতে পুলিশ জানিয়েছে, রবীন্দ্র সরোবর এলাকার বাসিন্দা বিট্টু কুমার ঝাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁদের। অভিযোগ, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অশান্তি তৈরির চেষ্টা। জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করা হয়েছে ধৃতদের বিরুদ্ধে। ডাক্তারদের আইনজীবীর প্রশ্ন, পুলিশের বক্তব্যে এটা স্পষ্ট যে তারা স্বতঃপ্রণোদিত কোনও কার্যক্রম করেননি। বিক্ষোভকারীদের সন্ধ্যা সাতটায় আটক করা হয়েছে আর এফআইআর হয়েছে, রাত ১১:৩৫ -এ। বিষয়টা একেবারেই স্বচ্ছ নয় বরং অভিসন্ধি আছে বলেই তাঁর দাবি।
পাল্টা সরকারি আইনজীবীর বক্তব্য, পুজো মন্ডপ প্রতিবাদের জায়গা নয়। তাঁর বক্তব্য প্রতিবাদ নিয়ে কোনও আপত্তি নেই। প্রতিবাদের স্থান নিয়ে আপত্তি রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট কি ওই জায়গায় গিয়ে প্রতিবাদ করতে বলেছে? যাঁরা গ্রেফতার হয়েছেন, তাঁরা কেউ ডাক্তার নন।
যেমনটা জুনিয়র ডাক্তাররা আগেও বলেছেন যে ডাক্তার-অডাক্তার বিভাজনের বিরোধীতা করছেন তারা। অন্যান্য আন্দোলনকারীদের বক্তব্য এ বস্তুতই সাধারন মানুষের প্রতিবাদ করার অধিকারের উপর ‘অনায্য প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ’।
ইন্দ্রানী চক্রবর্তী:এছাড়াও পুলিশ আদালতে জানিয়েছেন, ধৃতদের একটি নির্দিষ্ট হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে দেখা গিয়েছে যেখানে তারা এই কর্মসূচির পরিকল্পনা করছিলেন। অর্থাৎ এই প্রতিবাদ পূর্ব পরিকল্পিত অশান্তি তৈরির প্রচেষ্টা। ‘এঁরা জামিন পেলে এমন ঘটনা আরও ঘটতে পারে’, আদালতে দাবি পুলিশের। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ ১২ দিনের পুলিশী হেফাজত চাইলেও আদালত তা মঞ্জুর করেনি। বদলে ধৃতদের ৭ দিনের পুলিশী হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী ১৮ই অক্টোবর তাদের ফের আদালতে পেশ করা হবে।
এই খবর পাওয়া মাত্র আদালতের বাইরে বিক্ষোভ এবং কান্নায় ফেটে পড়েন আন্দোলনকারীরা। ক্ষুব্ধ ধর্ণা মঞ্চে উপস্থিত জনতাও। বারবার বাধার সম্মুখীন হয়ে প্রশাসনের প্রতি মুহুর্মুহু অসন্তোষ প্রকাশ করছেন তারা।