
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারুইপুর : ডেলিভারি সংস্থার আড়ালে প্রায় ১৫ কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়াল বারুইপুরে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে বড়সড় সাফল্য পেল বারুইপুর জেলা পুলিশ। ধৃত ডেলিভারি কোম্পানির মালিক সহ আরও দুই সহযোগী। অভিযুক্তদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণ সোনার গয়না ও দামি গাড়ি। বাজেয়াপ্ত হয়েছে একাধিক সম্পত্তিও।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সস্তা সুন্দর নামে একটি ঔষধ অ্যাপ কোম্পানির সঙ্গে ২০২২ সালে যুক্ত হয় ‘এসবি সিকিউরিটি অ্যান্ড সার্ভিস’ নামক একটি ডেলিভারি সংস্থা। মালিক তারকনাথ ভট্টাচার্য্যের সংস্থাটি মূলত ওষুধ ডেলিভারির কাজ করত। বিভিন্ন এলাকায় ওষুধ পৌঁছে দিয়ে সেই টাকা ফেরত পাঠানোর চুক্তি ছিল সংস্থাটির সঙ্গে। তবে অভিযোগ, চুক্তি অনুযায়ী টাকা ফেরত না পাঠিয়ে, দীর্ঘদিন ধরে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে এসেছে ওই সংস্থা।
২০২৪ সালে ‘সস্তা সুন্দর’ সংস্থার পক্ষ থেকে বারুইপুর থানায় প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করা হলে তদন্তে নামে জেলা পুলিশ। তদন্তে উঠে আসে বিস্ফোরক তথ্য। জানা যায়, ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে আনুমানিক ১৫ কোটি টাকার ওষুধ ডেলিভারি করেছে এসবি সিকিউরিটি অ্যান্ড সার্ভিস, কিন্তু তার বিনিময়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থার অ্যাকাউন্টে কোনও অর্থ পাঠানো হয়নি।
বারুইপুর জেলা পুলিশ সুপার পলাশচন্দ্র ঢালী জানান, ‘‘তদন্তে নেমে আমরা প্রথমে তারকনাথ ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করি। পরে তাঁর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় শতরূপা সরকার এবং পম্পা মিস্ত্রীকে।’’
তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় এক কোটি টাকার সোনার গয়না, বেশ কিছু বিলাসবহুল গাড়ি এবং নগদ প্রায় ৪.৫ কোটি টাকা। অভিযুক্তদের একাধিক ফ্ল্যাটও ইতিমধ্যে বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। অনুমান, প্রতারণা করে আদায় করা টাকাগুলি বিভিন্ন ব্যবসা ও সম্পত্তিতে বিনিয়োগ করেছিলেন অভিযুক্তরা।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। ধৃতদের পুলিশি হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। প্রতারিত সংস্থার টাকা সম্পূর্ণ উদ্ধারের চেষ্টাও চালাচ্ছে পুলিশ প্রশাসন।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই জেলা জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশের তৎপরতায় ইতিমধ্যেই অনেকটা পথ এগিয়েছে তদন্ত। বাকিটা সময় বলবে, প্রতারণার এই চক্রে আর কে বা কারা জড়িত আছে।