
উজ্জ্বল হোড়, জলপাইগুড়ি: আজ ১৬ই ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালে এই দিনেই পাকিস্তানের পাকসেনার অত্যচারের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাধীন হয়েছিল বাংলাদেশ। বাংলাদশের এই মুক্তিযুদ্ধে যেমন ছিল ভারতের সেনাবাহিনীর অবদান, তেমনই অনেক ভারতীয় লোকচক্ষুর আড়ালে সাহায্য করে গেছে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের। তেমনই একজন হলেন সোমনাথ চৌধুরী, বর্তমানে জলপাইগুড়ির মেটেলি থানার চালসার বাসিন্দা সোমনাথ বাবু মুক্তিযুদ্ধের সময় ছিলেন নদীয়া ও কৃষ্ণনগর এলাকার “জেমস বন্ড”। মুজিবর রহমানের হত্যার পর প্রাণ বাঁচাতে নদীয়া থেকে পালিয়ে চলে আসেন এই অঞ্চলে। তিনি জানান পাক সেনাদের নজর এড়াতে মাদুলিতে লুকিয়ে রাখতেন পৈতে, শিখেছিলেন উর্দু ভাষাও, মুসলমান সেজে পাক সেনাদের বিভিন্ন ছবি তুলে পাঠাতেন মুক্তি যোদ্ধা ও ভারতীয় সেনাবাহিনীকে। নিজের চোখে দেখেছেন ১৬ই ডিসেম্বরে পাক সেনাদের আত্মসমর্পণ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা।
সম্প্রতি ভারতের সাথে বাংলাদেশের যে চাপানউতোর,এবং হিন্দুদের উপর অত্যাচার প্রসঙ্গে বলেন পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া, জলপাইগুড়ির একাধিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে চলতো মুক্তি বাহিনীর জন্য বিশেষ অস্ত্র প্রশিক্ষণ এবং এক মাসের মধ্যে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের পাঠানো হত পাকসেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে, তাই ভারতীয়দের অবদান ছাড়া ওই দেশের স্বাধীনতা কোনোদিন আসত না।
ক্লান্ত সোমনাথ বাবুকে বর্তমান বাংলাদেশের যে এই পরিস্থিতি ও অন্তর্বর্তীকালীন স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন করলে ,তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন যে দেশের লোক মুজিবর রহমানকে হত্যা করতে পারে তাদের কাছ থেকে এমন জিনিসই তো অভিপ্রেত।
বয়সের ভারে ক্লান্ত সোমনাথ বাবু এখন আর নামতে পারেন না সম্মুখ সমরে কিন্তু যে স্বাধীনতা আনতে প্রাণ দিয়েছিল অসংখ্য মানুষ, সেই স্বাধীনতার অপমান যখন বাড়িতে বসে টিভির পর্দায় দেখেন তখন কখনো চোখ বেয়ে নেমে আসে জল বা কখনো ক্রোধের আগুন।
ভিডিও দেখুন-