
সুমিত চৌধুরী: অবশেষে কৌশল পরিবর্তন করছেন অভিষেক। বুড্ডা হটাও অভিযানে আপাতত বিরতি দিয়ে টেনে ধৈর্য ধরে সংগঠন গোছানোর দিকে মন দিয়েছেন। একুশে জুলাই এর মঞ্চ ও তার প্রতিফলন দেখা দিয়েছে। অভিষেকের বাহিনী একুশের মঞ্চ জুড়ে এবার দাপাদাপি করেননি।
বরং অভিষেককে প্রকাশ্যেই সৌজন্য করতে দেখা গিয়েছে সৌগত রায় ,কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। যাদের টিকিট দেওয়ার ব্যাপারেই যুব সেনাপতির বিরোধিতা ছিল বলে তৃণমূলের অন্দরমহল এর খবর।
একটা সময় মনে হচ্ছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় খুব দ্রুত দলের রাস নিজের হাতে নিতে চাইছেন। এবং সেই জন্য যুব নেতৃত্বে স্লোগান কে সামনে এনেছিলেন। এই ঘটনার রাজনীতিতে অবশ্য নতুন কিছু নয়। ইন্দিরা গান্ধীর বর্তমানে সঞ্জয় গান্ধী একটা সময় আক্রমণাত্মক ভাবে উঠে আসছিলেন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে।
কিন্তু এক্ষেত্রে তফাৎ হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখনি দলের যাবতীয় ক্ষমতার রাস অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দিতে প্রস্তুত নন। কুশলী রাজনীতিবিদ মমতা নিশ্চয়ই খবর রাখেন যে তার দলের অন্তত ৮০ জন বিধায়ক রয়েছেন যারা অভিষেকের নেতৃত্ব মেনে নিতে প্রস্তুত নন।
প্রবীণ এই সমস্ত বিধায়ক মন্ত্রীরা অনেকেই মনে করছেন যে অভিষেকের উথ্বান তাদেরকে বিপন্ন করে তুলেছে দলের মধ্যে। মন্ত্রী ও বিধায়ক ছাড়াও বলাবাহুল্য এই ত্রস্ত নেতৃবৃন্দের মধ্যে কয়েকজন প্রবীণ সাংসদ রয়েছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিলক্ষণ জানেন শুভেন্দু অধিকারী অমিত শাহের আশীর্বাদ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে অপারেশন লোটাস চালানোর জন্য মুখিয়ে রয়েছে। লখিন্দরের বাসর ঘরে ছিদ্র খোঁজার অপেক্ষা মাত্র। সবদিক বিবেচনা করেই মমতা এই লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকেই কঠোর হাতে দলের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখবার নীতি নিয়ে চলবার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছেন।
আমার নিজের ধারণা অভিষেকের যে কজন প্রকৃত শুভ চিন্তক রয়েছেন, তারা অভিষেককে বুঝিয়েছেন এত তাড়াহুড়ো করবার কিছু নেই। দিন আসবে। সময় আসবে।
সম্ভবত সব দিক বিবেচনা করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একটু ধরে খেলবার রণ কৌশল নিয়েছেন। তার মানে কখনোই এটা নয় যে অভিষেক পুরোপুরি হাত তুলে দিচ্ছেন।
আগামী তিন মাসের মধ্যে রাজ্যজুড়ে প্রভূত রদবদলের কথা শুনিয়ে রেখেছেন অভিষেক। এই রথ বদল যদি সত্যি হয় তাহলে বুথ স্তর পর্যন্ত সংগঠনে কারা এলো আর কারাবাদ গেল তার মধ্যে দিয়েও অনেক কিছু বোঝা যাবে।