
অনুসূয়া সিনহা, আসানসোল, পশ্চিম বর্ধমানঃ রানিগঞ্জের বল্লভপুর ষষ্ঠীতলা এলাকায় ভূমিধসের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, বৃষ্টি শুরু হলেই যদি এই ভূমিধস এখানে হয়ে থাকে, তাহলে পুরো দমে বর্ষা মৌসুম আসতে বাকি, ভবিষ্যতে আর কী কী দুর্ঘটনা ঘটবে জানি না। স্থানীয় লোকজন জানান, দীর্ঘদিন ধরে এখানে এ সমস্যা দেখা গেলেও গত শনিবার থেকে সমস্যা অনেক বেড়ে গেছে।
স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখানে ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে, কিভাবে ব্যারিকেড দিয়ে জনগণকে রক্ষা করা যায়! সেই প্রশ্ন তুলেছে স্থানীয়রা। বৃষ্টি হবে এবং এখানে যে কোন সময় মাটিতে প্রবেশ করতে পারে। প্রশাসনের কাছে যত দ্রুত সম্ভব এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবি জানান স্থানীয় মানুষ।
অন্যদিকে, এলাকার এক মহিলা জানিয়েছেন যে তিনি স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের সাথে এই বিষয়ে দেখা করতে গেলে তিনি বলেছিলেন যে এটি ইসিএলের বিষয় এবং তাকে ইসিএলের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলতে হবে। মহিলা বলেন, তিনি পঞ্চায়েত এলাকায় থাকেন, কোনো সমস্যা হলে তিনি তার পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে আবেদন করবেন, তিনি ইসিএল খুঁজতে কোথায় যাবেন। তারা বলে যে এলাকার মহিলারা পঞ্চায়েত প্রধানের সাথে দেখা করতে গেলে পঞ্চায়েত প্রধান তাদের সাথে ঠান্ডা কথা বলে এবং তাদের কথা শুনতেও অস্বীকার করে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে যা কিছু করার আছে তা ইসিএলের মাধ্যমে করতে হবে। যেখানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে, সেখানে ইসিএলের একটি পুরনো চানাকও রয়েছে যেখান থেকে আগে কয়লা খনন করা হয়েছিল।
ওই এলাকার আরেক জন স্থানীয় জানান, এ ঘটনায় তারা চরম আতঙ্কে রয়েছেন। তিনি তার সন্তান ও গবাদি পশু নিয়ে এখানে থাকেন, যে কোনো সময় তার জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে। তিনি বলেন যে পঞ্চায়েত প্রধান বলেছেন যে এই বিষয়ে ব্যবস্থা করা হবে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় সেই লোকেরা অনেক আতঙ্কে রয়েছে। তিনি বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় পুলিশ এসে ব্যারিকেড দিয়েছে ঠিকি। কিন্তু তাতে তারা সন্তুষ্ট নয়। তারা এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান চান।
অন্যদিকে, এলাকার সিটু নেতা হেমন্ত প্রভাকর জানান, শনিবার গভীর রাতেই এখানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে, মাটি তলিয়ে গেছে, প্রায় ২০ মিটার। পাশেই রয়েছে পুরনো বন্ধ খনি। যার জেরে এমন ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার জেরে এলাকার মানুষ আতঙ্কিত, পুলিশ প্রশাসন এসে ব্যারিকেড দিয়ে দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে ছেড়ে দিলেও এখন পর্যন্ত ক্ষমতাসীন দলের কোনো জনপ্রতিনিধি ও কোনো কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়নি। এলাকার মানুষ আতঙ্কিত যদি এই ধরনের ধস এবং বড় তাহলে হয়তো বড় কোন অঘটন ঘটতে পারে।