
ওঙ্কার বাংলা অনলাইন ডেস্কঃ আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে নারকীয় ঘটনা দেখালো সমাজের এক অন্ধকার নগ্নতা। সম্প্রতি আমরা দেখেছি চাঁদে পাড়ি দিয়েছে চন্দ্রযান ৩। শুরু হয়েছে সূর্যযান নিয়ে গবেষণা। মানুষ সূর্যের কাছে পৌঁছে যাবে। কিন্তু পৃথিবীর অন্ধকার কি মিটেছে মানুষের মনের অন্ধকার? সমাজের অন্ধকার?প্রশ্নটা ভাবাচ্ছে। ভাবাচ্ছে আদিবাসী বৃদ্ধার কাতর আর্তনাদ। বৃহস্পতিবার বিকেলে, আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের, পশ্চিম বর্ধমান জেলার ,অন্ডাল থানা এলাকায় এমনই আর্তনাদ করে, ভয়ে শিউরে ওঠা প্রবীণ বৃদ্ধা, পুলিশ প্রশাসনের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে বেড়ালেন।কাতর আর্তনাদ, “আমি ডান নইগো, আমি তোমাদের মতই একটা মানুষ, আমাকে ভালোভাবে বাঁচতে দাও, আমাকে সুস্থভাবে বাঁচতে দাও। আমি কাউকে খাইনি গো। বৃদ্ধার পাশে দাড়িয়ে অভিযুক্তদের কঠিনতম শাস্তির দাবি করে, অন্ডাল থানার দ্বারস্থ হলেন, আউসগ্রামের আদিবাসী ভারত জাকাত মাঝি পরগনার সদস্য।
তার দাবি বৃদ্ধাকে ডাইনি বলে প্রতিপন্ন করে তার সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিল বেশকিছু জন কু-মতলব কারি প্রতিবেশী। গুনিনের নিদানে, তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে, তার মাথা ন্যাড়া করে, নগ্ন করে আগুনে ঝলসে দেওয়া সহ, তার গায়ে বিষাক্ত কাঁটা বিঁধিয়ে দেওয়া হয়। এমনকি তাকে বিষাক্ত কাটার ওপর বসানো হয় বলে অভিযোগ।প্রশ্নের মুখে পশ্চিম বর্ধমানের প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে। পাশাপাশি দরিদ্র মানুষদের প্রতি সামাজিক নিপীড়নের করুণ চিত্র, স্পষ্ট হচ্ছে এই ঘটনা সামনে আসতে।নির্যাতিতা বছর ৬০’র বৃদ্ধা বলেন, ফরিদপুর থানার ইচ্ছাপুর এলাকার বাসিন্দা গুণীন – ওঝা । সে তাকে তুকতাক করার দোষ দিয়ে
ডাইনী অপবাদ দেয়।১০ – ১৫ জন তার ওপর চড়াও হয়। তাকে মারধর করে। সে অচেতন হয়ে পড়লে তারা তাকে নিস্তার দেয়। পরে, সারারাত ধরে পাশবিক অত্যাচার করে। ২০ হাজার টাকা ছেলের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। তার ছেলে ও মেয়ে বাঁধা দিতে গেলে, তাঁদেরও মারধর করা হয় বলে দাবি। মলমূত্র মিশিয়ে তাঁকে জোরপূর্বক খাওয়ানো হয়েছে বলেই কান্নায় ভেংগে পড়েন বৃদ্ধা। ডাইনীপ্রথার বিরুদ্ধে ক্রমাগত প্রচার চালানো হলেও আজও এমন নৃশংস ঘটনা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় পুলিশ প্রশাসনকে এ বিষয়ে আরও সচেতন হতে হবে।