
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা : সোমবার অধিবেশন চলাকালীন বিধানসভার ওয়েলে নেমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য সাসপেন্ড করা হল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। এই নিয়ে গত সাড়ে তিন বছরে চার বার বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড হলেন তিনি। এদিন বিধানসভায় উৎশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য একই সঙ্গে সাসপেন্ড করা হয়েছে আরও তিন বিজেপি বিধায়ক। এঁরা হলেন অগ্নিমিত্রা পাল, বিশ্বনাথ কারক এবং বঙ্কিম ঘোষ। এই সাসপেন্ড বজায় থাকবে আগামী ৩০ দিন বলে জানিয়ে দিয়েছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
সরস্বতী পুজো নিয়ে সোমবার বিধানসভায় মুলতুবি প্রস্তাব আনেন বিজেপির মহিলা বিধায়কেরা। ওই প্রস্তাব পাঠ করেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা। এবছর সরস্বতী পুজো নিয়ে কলকাতার যোগেশচন্দ্র কলেজে যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছিল প্রস্তাবটি ছিল সেই বিষয়ে। এদিন প্রস্তাবটি পাঠ করার পর তা নিয়ে আলোচনা চান অগ্নিমিত্রা পাল। কিন্ত অধ্যক্ষ তা নাকচ করে দিলে বিজেপি বিধায়কেরা অধিবেশন কক্ষে বিক্ষোভ শুরু করেন। ওয়েলে নেমে কাগজ ছিঁড়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন শুভেন্দু। অধিবেশন কক্ষে বিক্ষোভের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন অধ্যক্ষ বিমান। এরপর বিজেপি বিধায়করা অধিবেশন কক্ষ থেকে ওয়াক আউট করেন।
বিজেপি বিধায়কদের ওয়াক আউটের পরে তৃণমূল পরিষদীয় দলের তরফে নির্মল ঘোষ শুভেন্দু-সহ বিজেপি বিধায়কদের সাসপেন্ড করার প্রস্তাব আনেন বিধানসভায়। এই প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটির পর শুভেন্দু অধিকারী সহ আরও তিন বিধায়ককে ৩০ দিনের জন্য বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড করেন অধ্যক্ষ।
অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বিরোধী দলনেতা-সহ আরও কয়েক জন সদস্য আজ যে আচরণ করেছেন, যে ভাবে সরকারি কাগজগুলি ছিঁড়ে তাঁর চেয়ারের দিকে ছুঁড়ে ফেলেছেন, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এই মর্মে আজ একটি প্রস্তাব আনেন নির্মল ঘোষ। যাতে বলা হয়, এই আচরণের জন্য আগামী ৩০ দিন বা অধিবেশন শেষ হওয়া পর্যন্ত সাসপেন্ড করা হোক। অধিবেশনে সেই সময়ে উপস্থিত বিধায়কেরা সকলে এতে সম্মতি জানান বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড হওয়ার পরেই বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে বসেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। মঙ্গলবার বিধানসভায় বক্তৃতা করার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শুভেন্দু জানান, ওই সময়ে বিজেপি বিধায়কেরা অধিবেশনে যোগ দেবেন না। তিনি বলেন, যে দিন মুখ্যমন্ত্রী আসবেন, তাঁকে ‘শেম শেম’ জানিয়ে বয়কট করা হবে। আগামীকাল বিজেপি বিধায়কেরা বিধানসভার গেটের সামনে বসে প্রতিবাদ করবেন বলেও জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বক্তৃতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
ভিডিও দেখুন-