
ত্রয়ণ চক্রবর্তীঃ বিজেপির প্রবল বিরোধিতা সত্ত্বেও ১৬৭-৬২ ভোটে বিধানসভায় পাস হয়ে গেল ১লা বৈশাখ পশ্চিমবঙ্গ দিবসের প্রস্তাব। পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাংলার মাটি বাংলা জল গানটি রাজ্যের সঙ্গীত হিসেবেও পাশ হয়ে যায়। ভোটদানে বিরত ছিলেন আইএসএফের একমাত্র বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। বিধানসভায় এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধীতা করেন শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধী দলনেতা বলেন রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালকে বলবো প্রস্তাবে সই না করতে। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে ২০ জুন পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের অনুরোধ করা হবে বলেও জানান শুভেন্দু বাবু।
এদিন ১ বৈশাখকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে প্রস্তাব পেশ করে তৃণমূল। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জবাবি ভাষণে বলতে উঠে মুখ্যমন্ত্রীও তীব্র ভাষায় বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে জন সংঘের কোনও ভূমিকাই ছিল না। ওরা জাতির জনককে হত্যা করেছিল। যদি রাজ্যপাল পশ্চিমবঙ্গ দিবসের প্রস্তাবে স্বাক্ষর নাও করেন তবু পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালিত হবে। আমি দেখব কার শক্তি বেশি, ওদের না জনগণের।
এদিন প্রস্তাবে আলোচনার সময় শঙ্কর ঘোষের কিছু বক্তব্য বাদ দেন স্পিকার, প্রতিবাদ করেন বিরোধী দলনেতা। স্পিকার বলেন, চেচিয়ে কথা বলবেন না,এটা বিধানসভা,মাছ বাজার নয়। পাশাপাশি আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি বলেন বাংলা দিবস পালন হলে কী বাংলা দূর্নীতি মুক্ত হবে? চাকুরী প্রার্থীরা চাকরি হবে? সরকারি কর্মচারীরা কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পাবে?
আলোচনা সভার শুরুতে বিজেপি বিধায়করা পশ্চিমবঙ্গ দিবস ২০ জুন লেখা গেঞ্জি পড়ে বিধানসভায় প্রবেশ করলে তাঁদের গেঞ্জি খোলার আবেদন জানান স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এর প্রতিবাদ জানান বিজেপি বিধায়করা। এরপর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিধানসভা থেকে পায়ে হেঁটে বিজেপি বিধায়করা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করতে যান।
পাশাপাশি এদিন বিধানসভায় বিধায়ক ও মন্ত্রীদের বেতন বৃদ্ধির কথাও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধায়ক এবং মন্ত্রীদের বেতন এদিনবাড়ল ৪০ হাজার টাকা করে। তবে বিধায়ক মন্ত্রীদের বেতন বৃদ্ধি করলেও নিজের বেতন বাড়ান নি মুখ্যমন্ত্রী। এতদিন বিধায়করা মূল বেতন পেতেন ১০ হাজার করে। রাষ্ট্রমন্ত্রীরা মূল বেতন পেতেন ১০,৯০০ টাকা। আর মন্ত্রীদের মূল বেতন ছিল ১১ হাজার টাকা । এবার থেকে বিধায়করা মূল বেতন পাবেন ৫০ হাজার টাকা। রাষ্ট্রমন্ত্রীরা মূল বেতন পাবেন ৫০ হাজার ৯০০ টাকা আর মন্ত্রীরা পাবেন ৫১ হাজার। বিধায়করা মাইনে ভাতা মিলিয়ে এত দিন পেতেন ৮১,৮৭০ টাকা। তার সঙ্গে যুক্ত হল ৪০ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে এবার তাঁরা পাবেন ১, ২১, ৮৭০ টাকা।
বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির তীব্র সমালোচনা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং সিপিআইএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী।