
নিজস্ব সংবাদদাতা, নদীয়া : বাড়িতে ঢুকে এক মহিলাকে চুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলে লাথি, কিল, ঘুসি মারার পাশাপাশি টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠল নদীয়া দক্ষিণ জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি নির্মল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে শান্তিপুর থানার অন্তর্গত বাবলা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাটনা এলাকায়। এই ঘটনায় শনিবার শান্তিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আক্রান্ত মহিলা সরস্বতী মিত্র।
অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই বাটনা এলাকার বাসিন্দা সরস্বতী মিত্রের সঙ্গে জমিজমা সংক্রান্ত বিবাদ চলছিল নির্মল বিশ্বাসের। শুক্রবার সন্ধ্যায় হঠাৎ সরস্বতীদেবীর বাড়িতে চড়াও হন নির্মলবাবু। অভিযোগ, প্রথমে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন তিনি। তারপর সরস্বতীদেবীর চুলের মুঠি ধরে তাঁকে মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করেন। ওই সময় তাঁর চিৎকার শুনে স্থানীয় কয়েকজন ছুটে এলে অভিযুক্ত নেতা তাঁর ব্যাগ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দেন বলে দাবি মহিলার।
শান্তিপুর থানায় অভিযোগ দায়েরের পর সরস্বতীদেবী জানান, “এই জমিতে বহু বছর ধরে আমরা বসবাস করছি। তবু নির্মল বিশ্বাস সেটি নিজের বলে দাবি করে বারবার হুমকি দিচ্ছেন। এ বার তো ঘরে ঢুকে মারধর করলেন। আমি চাই প্রশাসন দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিক।”
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি নেতা নির্মল বিশ্বাস বলেন, “সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন। দীর্ঘদিন ধরেই ওই জমি নিয়ে কোর্টে মামলা চলছে। তৃণমূল রাজনৈতিক ভাবে আমাকে ফাঁসাতে চাইছে। এটা সম্পূর্ণ তাদের ষড়যন্ত্র”।
ঘটনা নিয়ে পাল্টা তোপ দেগেছেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি-র নদীয়া জেলা সভাপতি সনৎ চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, “নির্মল বিশ্বাসরা বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের ঘনিষ্ঠ। যখন সাংসদ নিজেই মহিলাদের সম্মান দিতে জানেন না, তখন তাঁর ঘনিষ্ঠদের কাছ থেকে আর কী আশা করা যায় ! সারা রাজ্য জুড়েই বিজেপি নেতারা মহিলাদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে। শান্তিপুর তারই এক উদাহরণ”।
এদিকে, পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনার রাজনৈতিক রঙ নিয়ে ইতিমধ্যেই সরগরম শান্তিপুরের রাজনৈতিক মহল। পুলিশের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকেই এখন নজর সকলের।