
সুমন গঙ্গোপাধ্যায়ঃ সত্যিই ক্যাপ্টেন হয়ে উঠলেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়? রবিবারের ব্রিগেড এর পর আরও জোরালো হচ্ছে সেই দাবি। রবিবারের ব্রিগেড কার্যত অবাক করে দিয়েছে তাবর তাবর রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। সাম্প্রতিক কালে একটি রাজনৈতিক দলের শুধু মাত্র যুব সংগঠনের ডাকে এতবড় ব্রিগেড! শেষ কবে হয়েছে খুব একটা মনে পড়ছে না। ইনসাফ যাত্রা যদি মীনাক্ষীর মুখ হয়ে ওঠার আতুর ঘর হয়, রবির লাখো মানুষের ব্রিগেড সেই মীনাক্ষীর ভরসার মুখ হয়ে ওঠার সেমি ফাইনাল।
আগেই লিখেছিলাম, বামেদের একটা চিরাচরিত ‘মিথ’ ভেঙে দিয়েছেন এই যুব নেত্রী। লেনিন- মার্কস আর মৃত্যুর পর জ্যোতি বসুর মুখ ব্যবহার করে পোস্টার-ব্যানার ই ছিল সিপিআইএমের প্রচারের দোস্তর। সেই ধারনাকে কার্যত গুরিয়ে দিয়ে গোটা বাংলা ছেয়ে গেল মীনাক্ষীর মুখ দেওয়া পোস্টার ব্যানারে।
সোশ্যাল মিডিয়া ভরিয়ে দেওয়া হলো মীনাক্ষীর বক্তব্য আর মিছিলে র ফুটেজে। স্লোগান একটাই ‘ক্যাপ্টেন মীনাক্ষী’। রবিবার রীতিমত সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বা মহেন্দ্র সিং ধোনি হয়ে নিজে যেমন শতরান করলেন, পাশাপাশি টিমকেও জেতালেন ক্যাপ্টেন মীনাক্ষী। মঞ্চে সূর্য মিশ্র, সুজন চক্রবর্তী, মহ: সেলিমরা মঞ্চে থাকলেও, চুম্বক এর টান যে মীনাক্ষী, তা মেনে নিচ্ছেন মিছিলে আসা কমরেডরাও।
একটু ফ্ল্যাস ব্যাক এ যান, মীনাক্ষীর জায়গায় বসিয়ে নিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে l দেখুন খুব সহজে হিসাব দুয়ে দুয়ে চার হয়ে যাবে। একসময় মঞ্চে তৃণমূল বা তৎকালীন যুব কংগ্রেসের একাধিক হেভিওয়েট মুখ থাকলেও ব্রিগেড বা অন্য সব সভা ভরাতে মুখ ছিলেন সেই মমতাই। মীনাক্ষীও যেন সেই ইতিহাসকেই মনে করিয়ে দিলো।
তাহলে কি মমতা’র পাল্টা মুখ হিসাবে উঠে আসছে মীনাক্ষী? এই প্রশ্ন উঠে আসছে বারেবারে। না, হয়তো সেই জায়গা তৈরি হতে মীনাক্ষীকে এখনও অনেক অনেক পথ পার হতে হবে। তবে একথা সঠিক, প্রায় শূন্য হয়ে যাওয়া সিপিএমের কাছে এই মুহূর্তে ফিনিক্স পাখি এই যুব নেত্রী। এবার একটু ফিরে আসা যাক ব্রিগেড এর দিকে। উপচে পড়া ভিড়, আর সেই ভিড় থেকেই হিন্দী- বাংলা মিলিয়ে মোদী-মমতা থেকে শুভেন্দুকে তীব্র আক্রমণ সবেতেই রীতিমত চোখে চোখ রেখে কথা বলেছেন তিনি। তাই নয়, বক্তা হিসাবে এই যুব নেত্রী র শুধু নাম ঘোষনা হ তে ই গোটা ব্রিগেড জুড়ে যেভাবে তাঁর নামে স্লোগান আর হাততালি শোনা গেল, সেটাই অনেক টা প্রমাণ করছে এই মুহূর্তে সিপিএম এর লড়াই এ ফিরে আসতে ভরসা র করতেই হবে মীনাক্ষীকেই।
বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক অভিষেক দে বিশ্বাস এর মতে, ” কালকের ব্রিগেড সিপিএম ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর সব থেকে ভিড়ের ব্রিগেড। আর এই ব্রিগেড প্রমাণ করলো বামেদের ভবিষ্যৎ নয়, বরং বর্তমানের নাম মীনাক্ষী। কালকের ব্রিগেড থেকে এটা বোঝা গেল যে শুধুমাত্র শহুরে রাজনীতি নয় শহর এবং রামকে মিলিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে হবে আর সেইখানেই এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে ফিটেস্ট মুখ মীনাক্ষী।”