
সঞ্জয় রায়চৌধুরী, ওঙ্কার বাংলা : রাজ্যের বেসরকারি স্কুলগুলির লাগামছাড়া বেতন নেওয়ার প্রবণতা রুখতে কড়া আইন প্রণয়নের কথা ভাবছে রাজ্য সরকার। বিধানসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, বেসরকারি স্কুলের ফি কাঠামোর উপর নিয়ন্ত্রণ করতে ইতিমধ্যেই একটি শিক্ষা কমিশনের চিন্তাভাবনা করেছে সরকার। বেসরকারি স্কুলের ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষা মন্ত্রী জানান, এটা ঠিক বেসরকারি স্কুলের অতিরিক্ত ফি বৃদ্ধির ফলে অভিভাবকদের উপর চাপ বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট কমিশন এই সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে। পাশাপাশি, স্কুলগুলো যাতে অতিরিক্ত মুনাফা করার লক্ষ্যে ব্যবসা চালাতে না পারে তার জন্য একটি বিলও আনতে চলেছে রাজ্য সরকার।
ফি বৃদ্ধির কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী আগেই জানিয়েছেন, বাংলা মাধ্যম স্কুলের দিকে ঝোঁক কমে যাচ্ছে অভিভাবকদেরও। এখন সবাই ইংলিশ মিডিয়ামে ঝুঁকছে। সেই চাহিদা বৃদ্ধির কারণেও ফি নিয়ে এত অশান্তি। স্কুল ফি নিয়ন্ত্রণ বিলের কথা তুলে এদিন তিনি এ বিষয়ে বিজেপি বিধায়করাও যাতে এই বিল সমর্থন করেন তার জন্য আবেদন জানান শিক্ষামন্ত্রী ।
রাজ্যের বেসরকারি স্কুলগুলিতে বেতন বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইভেট স্কুল রেগুলেটরি কমিশন’ গঠনের জন্য ২০২৩ সালের অগস্ট মাসে নীতিগত অনুমোদন দেয় রাজ্য মন্ত্রিসভা।শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, কমিশনে মোট ১১ জন সদস্য থাকবেন, যার প্রধান হবেন এক জন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। কমিশনের বাকি সদস্যদের মধ্যে থাকবেন স্কুল শিক্ষা কমিশনার, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চশিক্ষা সংসদের সভাপতি, শিক্ষামন্ত্রী মনোনীত দু’জন শিক্ষাবিদ। এ ছাড়া সিবিএসই এবং আইসিএসই বোর্ডের প্রতিনিধিরাও থাকবেন বেসরকারি স্কুলে বেতন বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের এই কমিশনে। বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের বেতন সংক্রান্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখে তা সমাধানের দায়িত্ব থাকবে এই কমিশনের উপর। এই কমিশন গঠনের মূল উদ্দেশ্য হল বেসরকারি স্কুলগুলির অতিরিক্ত বেতন নেওয়া আটকানো এবং বেতন সংক্রান্ত অন্য অভিযোগগুলির দ্রুত নিষ্পত্তি করা।