
ওঙ্কার ডেস্কঃ রাত পোহালেই বড়দিন। কলকাতা থেকে জেলা প্রত্যেকটি বাজারেই জোর কদমে চলছে কেক কেনা বেচা। সময়ের সাথে সাথে পাল্টেছে কেকের ভ্যারাইটি ও উপকরণ, এসেছে অনেক নতুন ব্র্যান্ড, কিন্তু এখনও আসানসোলের বাজার মাতিয়ে রেখেছে উনিশ শতাব্দীতে স্কটল্যান্ড থেকে আসা ডুণ্ডি কেক। তৎকালীন স্কটিশদের কাছ থেকে কেক বানানোর এই কৌশল শিখে নিয়েছিলেন আসানসোলের কিছু মানুষ। এর পর থেকেই আসানসোলে তৈরি হয় ডূণ্ডি কেকের অনেকগুলি দোকান, যার মধ্যে অন্যতম একটি হল ১৮৮৮ সালে তৈরি হওয়া “ওয়াহিদ অ্যান্ড সনস”। দোকানের ইতিহাস সম্পর্কে দোকানের বর্তমান মালিক আবু তাহের জানান “১৮৮৮ সালে চালু হয় আবদুল ওয়াহিদের দোকান, যা আজকের দিনে শরিকি ভাগে হয়ে দাঁড়িয়েছে “ওয়াহিদ অ্যান্ড সনস”। এছাড়াও সেই সময়ে আরও কয়েকটি দোকান গড়ে উঠেছিল তার মধ্যে অন্যতম মেহের আলি বক্সের দোকান, মিনার কনফেকশনারি। আসানসোলের বিশিষ্ট চিকিৎসক, লেখক এবং গবেষক তিলক পুরকায়স্থ জানান, স্কটিশ সাহেবদের গিন্নিরাই বাড়ির রাঁধুনিকে রেসিপি বলে দিয়ে বাড়িতেই তৈরি করান ডুন্ডি কেক। স্কটিশ মল্ট হুইস্কির ফ্লেভারে ডুন্ডি কেকের একই স্বাদ পেয়ে সাহেবরাও খুশি হলেন গিন্নিদের উপর। কিন্তু কোনও ভাবে এই রেসিপি বাইরে চলে আসে। মনে করা হয়, এদেশীয় পাচকদের দ্বারাই সেই কেকের রেসিপি বাইরে আসে । আর সাহেবদের কাছে এই কেকের বিরাট চাহিদা জেনে আসানসোলে পরপর বেশ কয়েকটি বেকারি তৈরি হয়।
প্রসঙ্গত, স্কটল্যান্ডের ডুন্ডি নামে একটি জায়গা আছ, যেখানে এই কেকের প্রচলন। স্কটল্যান্ডের রানী মেরির স্মৃতিরক্ষার্থে ও তাঁর সম্মানেই এই ডুন্ডি কেক তৈরি শুরু হয়। যা স্কটিশ সাহেবদের কাছে খুব প্রিয় হয়ে ওঠে। এই কেকের মূল উপাদান হিসেবে মেশানো হত স্কটিশ মল্ট হুইস্কি। এছাড়াও আমন্ড বাদাম, কালো ও সবুজ কিশমিশ অন্যান্য ফ্রুটসও থাকত। মুখে লেগে থাকার মতো ছিল সেই ডুন্ডি কেকের স্বাদ। এখন যাকে বলা হচ্ছে ফ্রুট কেক বা পাম কেক।