
উজ্জ্বল হোড়, জলপাইগুড়ি : হাতে ভয়ঙ্কর অস্ত্র, কোলে সন্তান! ভাবছেন এটা আবার কী! তাই তো? এবারের পূজতে জলপাইগুড়ি গেলে ঠিক এরকমটাই দেখতে পাবেন। জলপাইগুড়ি শহরে। পিকাসোর পিউরিজম ভাবধারার অনবদ্য সৃষ্টি গুয়ের্নিকা ফুটে উঠবে নতুন পাড়া আদী’র পূজো মণ্ডপের দশভূজার আঙ্গিকে।
প্রাচীনতম নতুন পাড়া আদী পূজো কমিটি প্রত্যেকবারই নতুন থিম আনেন। এবারে তাদের চমক ধরতে পিকাসোর পিউরিজম ভাবধারার অনবদ্য সৃষ্টি গুয়ের্নিকা। বর্তমান পরিস্থিতিকে তুলে ধরতেই এই উদ্যোগ। পুজোর থিম কে সামনে রেখেই কাঠ এবং প্লাই বোর্ডের ওপর মাটির প্রলেপ দিয়ে শিল্পীর নিজস্ব স্টুডিওতে তৈরী করা হচ্ছে দশভূজা দেবী দুর্গার মূর্তি সহ অস্ত্রশস্ত্র, সাজসরঞ্জাম। এমনটাই জানালেন শিল্পী বিশ্বজিৎ ঘোষ। তিনি জানান, বর্তমানে যে সময় এবং পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে সমগ্র রাজ্যে, দেশ, তথা বিশ্ব, এমনই পরিস্থিতি দেখা গিয়েছিল একশো বছর আগেও, সেই কারণেই পিকাসোর শিল্প কর্মে যে পিউরিজম ফুটে ওঠে সেটি এবং তার সঙ্গে ভারতীয় শিল্প কলার ফিউসান করেই এই কাজ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, পাবলো পিকাসোর সৃষ্টি গুয়ের্নিকা একটি ম্যুরাল যা গৃহ যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট সম্পূর্ণ ধ্বংস এবং বেদনাকে চিত্রিত করে। স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধের সময় ১৯৩৭ সালের এপ্রিলে বাস্ক শহর গুয়ের্নিকাতে বোমা হামলার মাত্র কয়েকদিন পরে শুরু হয়েছিল, কিউবিস্ট-পরবর্তী চিত্রকর্মটি বিভিন্ন দৃশ্যের মধ্যে একটি একরঙা কোলাজ, যার মধ্যে একজন মহিলা তার পিছনে একটি পুড়ে যাওয়া কাঠামো সাথে ভয়ঙ্করভাবে তার হাতে অস্ত্র তুলেছেন, একজন মহিলা একটি মৃত শিশুকে ধরে রাখা, একটি ষাঁড়ের অসম্ভব কোণযুক্ত মাথা এবং তার উপরে একটি বৈদ্যুতিক আলো ঝুলছে। স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধের আবহের সঙ্গে বর্তমানে দেশ, রাজ্যে তথা বিশ্ব জুড়ে চলা অশান্তির স্বরুপ অনেকটাই মিলে যায়। আর এই পরিস্থিতিতে পিকাসোর সেই অনবদ্য সৃষ্টি যে সঠিক এবং সময়োপযোগী সেটি অনুভব করেছে জলপাইগুড়ি শহরের অন্যতম দুর্গা পুজো কমিটি , নতুন পাড়া আদী।