
ত্রয়ন চক্রবর্তী : দুপুরের দিকে শেষ প্রতিমাটি কুমারটুলি থেকে রওনা দিল মন্ডপের উদ্দেশ্যে। তিনমাস ধরে কুমারটুলির সমরের(নাম পরিবর্তীত) স্যাঁতসেঁতে ঘর থাকত জমজমাট । সেখানেই তো মাটির প্রতিমা হয়ে যায় বাঙালীর আদরের উমা। ভরে উঠে পাড়ার মন্ডপগুলি,আলোয় ঝলমলে করে শহর। আর সমরদের ঘরগুলো তখন নিঃশব্দ অন্ধকারের মৃয়মান হয়ে যায়। তিনমাস ধরে ঝড়,বৃষ্টি সামলে গড়ে তোলা প্রতিমা ঘর ফাঁকা করে চলে যায়। সমরদের শুকনো মুখ আর টলটলে জল ভরা চোখ যেন বলে, মেয়ে আজ বাপের বাড়ি ছেড়ে চলে গেল শশুর বাড়ি। কষ্ট তো হয়। কুমারটুলিতে সমরের মতো প্রতিমাশিল্পীর সংখ্যা প্রায় ৩৫০। জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয় তাদের প্রতিমা গড়ার কাজ। ষাট পাওয়ার বাল্ব অনেকসময় হাতে লম্প নিয়ে মাটির প্রতিমা সেজে ওঠে মৃন্ময়ী রূপে। এযেন তাদের কাছে নিজের মেয়েকে ছোটো থেকে বড় করে পরের ঘরে পাঠিয়ে দেওয়ার গল্প। এরপরও অল্প কাজ বাকি থাকে,কিন্তু দূর্গা প্রতিমা চলে যাওয়ার পর শুধু কুমারটুলির ঘরগুলোই ফাঁকা হয়ে যায় না, খাঁ খাঁ করতে থাকে সমরদের ভিতরটা।