
সঞ্জয় রায়চৌধুরী, ওঙ্কার বাংলাঃ আরজি কর কাণ্ডের ঘটনা নিয়ে রাজ্য জুড়ে চলছে আন্দোলন। ঘটনার ন্যায় বিচার চেয়ে আমারণ অনশনে জুনিয়র ডাক্তাররা। অনশনের প্রায় ১৬০ ঘণ্টা অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পরও সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কোন সদর্থক বার্তা আসেনি। সাংবাদিকদের সামনে ডাক্তাররা মুখোমুখি কি বলেন দেখুন –
আজ আমাদের সহকর্মীদের আমরণ অনশনের অষ্টম দিন। ১১ জন অনশনকারীদের মধ্যে ইতিমধ্যে দুজন আই.সি.ইউ তে ভর্তি। আমরা তাদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত। আমরা বিশ্বাস করি তাদের দশ দফা দাবি যুক্তিসঙ্গত। এই দাবিতে এক দিকে যেমন অভয়ার খুন ও ধর্ষণের ন্যায়বিচারের দাবি আছে, সেরকম ভবিষ্যতে যেন এরকম ঘটনা আর না ঘটে তারও প্রতিকার আছে। এছাড়া রোগী ও সাধারণ মানুষের স্বার্থের দিকেও নজর রাখা হয়েছে এতে। আমরা মনে করছি সরকার থেকে সদর্থক কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছেনা। এই পরিস্থিতিতে বেশীরভাগ ডাক্তারই উদ্বিগ্ন, হতাশ ও ভীত। এই মানসিক পরিস্থিতিতে আমাদের পক্ষে দৈনন্দিন কাজ করা খুব মুশকিল হয়ে যাচ্ছে।
১৪ ই অক্টোবর সোমবার থেকে বেসরকারী হাসপাতাল বা ক্লিনিকে কর্মরত বেশীরভাগ ডাক্তাররাই এমারজেন্সি ছাড়া বাকি পরিষেবা থেকে বিরত থাকবেন। এই আন্দোলন শুধু ডাক্তারদের নয়, প্রথম দিন থেকে সমাজের সব স্তরের মানুষ এই ঘটনার প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করেছেন। তাই তাদের তথা রোগীস্বার্থের দিকে আমাদের নজর থাকবে ও এমারজেন্সি পরিষেবা কোনভাবে যেন ব্যহত না হয় সেদিকে আমাদের খেয়াল থাকবে। তাও যে সকল রোগীদের এর জন্য সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে, তাদের কাছে আমরা আগাম ক্ষমাপ্রার্থী, কিন্তু যেখানে আমাদের ১১ জন সহকর্মী ন্যায্য কিছু দাবি নিয়ে মৃত্যুর সাথে পান্জা লড়ছে, আমাদের পক্ষে কাজে মনোনিবেশ করা সম্ভব নয়। আমরা যতটা সময় পারব, তাদের পাশে থেকে মনোবল বাড়ানোর চেষ্টা করব।
আমাদের তরফ থেকে সরকারকে অনুরোধ অনশনকারী ডাক্তারদের দাবীগুলি সহমর্মিতার সাথে বিচার করার জন্য। এই সমস্যার আশু সমাধান হলে আমরাও আমাদের দৈনন্দিন কাজে ফিরতে পারি ও রোগীস্বার্থে সময় দিতে পারি। আমরা আপাতত ৪৮ ঘন্টা নন-এমারজেন্সি কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নিচ্ছি, তবে আমাদের নজর সরকারের পদক্ষেপের দিকে থাকবে। যদি সদর্থক পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাই, তাহলে আমরা কাজে ফিরতে পারব ও তা না হলে এই কর্মবিরতিকে দীর্ঘায়িত করতে হবে, যা আমরা কেউই চাই না। আমরা কলকাতা পুলিশের ভূমিকাতেও খুবই হতাশ ও উদ্বিগ্ন। কখনও স্লোগান দেওয়ার অপরাধে জনসাধারণকে গ্রেফতার করা হচ্ছে তো, আবার কখনও অত্যাবশ্যক দ্রব্য সরবরাহের জন্য ভ্যান বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে। এই অতি তৎপর পুলিশই হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজগুলিতে সামান্য সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ। এই সাংবাদিক সম্মেলনের জন্য আমরা প্রথমে একটি হোটেলের সভাগৃহ বুকিং করা হলেও পুলিশের অতি সক্রিয়তায় তা বাতিল করা হয়। আমরা পুলিশ প্রশাসনের এহেন ভূমিকায় হতাশ ও এর তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি।