
নিজস্ব প্রতিনিধি, ওঙ্কার বাংলা : ইডির বেশিরভাগ মামলাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত, এমনটাই বহুদিন ধরে বলে আসছেন অ-বিজেপি দলের নেতারা। তাঁদের অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদীর জমানায় দেশের ১৯৩ জন রাজনীতিকে বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা ঠুকে তদন্ত চালাচ্ছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এর মধ্যে এখনও পর্যন্ত মাত্র দু’জনের সাজা নিশ্চিত করতে পেরেছে এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
বিরোধীদের অভিযোগ, এইসব মামলার কোনও সারবত্তা নেই। তাই আদালতে তারা প্রমাণ করতে পারছে না এদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলি। রাজ্যসভায় অর্থ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরী সিপিএম সাংসদ এ এ রহিমের প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছেন, বাকি নেতাদের মামলা বিচারাধীন থাকলেও কাউকেই আদালত রেহাই দেয়নি। বিরোধীদের নিশানা করার অভিযোগ খণ্ডন করে মন্ত্রী বলেন, ইডি দল, জাত, ধর্ম বিচার করে মামলা করে না। ফলে সরকারের পক্ষে বলা সম্ভব নয় অভিযুক্ত ১৯৩ জন রাজনীতিক কোন দলের সদস্য। মন্ত্রীর বক্তব্যকে হাস্যকর বলে জানিয়েছেন বহু বিরোধী নেতা।
প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, নরেন্দ্র মোদীর সরকারের দ্বিতীয় দফা অর্থাৎ ২০১৯ থেকে ২০২৪-এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রাজনীতিক ইডির তদন্তের মুখোমুখি হয়েছেন। তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে তদন্ত ও মামলা চলছে। পরিংসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৯০’২০ এবং ২০২১-’২২ অর্থ বছরে ২৬ জন করে নেতার বিরুদ্ধে বেআইনিপথে অর্থ লেনদেনের অভিযোগে মামলা করেছে ইডি। ২০২২-’২৩ অর্থ বছরে ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল ইডি। প্রসঙ্গত, এই সময়ের মধ্যে কংগ্রেসের দুই শীর্ষ নেতা সনিয়া ও রাহুল গান্ধীকেও ছাড়েনি ইডি। একই মামলায় তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আয়কর সংক্রান্ত একটি মামলায় দু’জনেই জামিনে মুক্ত।
ইডি, সিবিআই মোদী সরকারের রাজনৈতিক অস্ত্র হিসাবে কাজ করে চলেছে, এই দাবি বিরোধীদের বহুদিনের। বিরোধীদের হেনস্থা করতেই এজেন্সিকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে তাঁদের অভিযোগ। সরাসরি এই অভিযোগকে মান্যতা না দিলেও একাধিক আদালত ইডির তদন্তে দীর্ঘসূত্রিতা এবং অভিযুক্তদের আটরে রাখার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। ইডির আইনের কিছু ধারাও আদালত বাতিল করে দিয়েছে। তবে আইনের সবচেয়ে বিতর্কিত অংশটি বহাল থাকায় ইডিকে সমঝে চলতে হচ্ছে বিরোধীদের। কারণ একমাত্র এই এজেন্সির আদালতের অনুমতি ছাড়া অভিযুক্তের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার অধিকার আছে।