
ওঙ্কার ডেস্ক: বর্ণাঢ্য সংগীত প্রতিযোগিতা ইন্ডিয়ান আইডল-এর ১৫তম সিজনে বাজিমাত করলেন কলকাতার কন্যা মানসী ঘোষ। রবিবার রাতে অনুষ্ঠিত গ্র্যান্ড ফিনালেতে বিজয়ীর মুকুট উঠল ২৪ বছর বয়সী এই প্রতিভাবান কণ্ঠশিল্পীর মাথায়। ট্রফির পাশাপাশি মানসী পেয়েছেন ২৫ লক্ষ টাকার নগদ পুরস্কার ও একটি নতুন গাড়ি।
মানসীর জয়ে খুশির হাওয়া তার পরিবারে। “ফাইনালের দিন মা-বাবা ও পরিবারের সবাই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। আবেগে সবাই কেঁদে ফেলেছিল। আমি নিজেই কিছুটা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম, কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেব বুঝে উঠতে পারিনি,” জানালেন মানসী। “এটা শুধু আমার জন্য নয়, গোটা পরিবারের, এমনকি গোটা শহরের জন্য একটা বড় অর্জন।”

সংগীতের প্রতি ভালবাসা মানসীর ছোটবেলা থেকেই। তবে এই যাত্রার পেছনে সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা তাঁর মা, সে কথা বারবারই উচ্চারণ করেছেন বিজয়ী। “মায়ের জন্যই আজ আমি এই জায়গায় পৌঁছেছি,” বললেন মানসী।
বিজয়ী হওয়ার পর মানসী জানালেন, পুরস্কারের টাকার একটা বড় অংশ তিনি ব্যয় করতে চান নিজের স্বাধীন সংগীত তৈরিতে। “আমি চাই আমার নিজের গান, আমার ভাবনা নিয়ে কিছু কাজ করতে। গাড়িটা তো কাজে আসবেই,” হেসে বললেন তিনি।
শুধু এখানেই থেমে নেই মানসীর সাফল্য। ইন্ডিয়ান আইডল মঞ্চ থেকে বলিউডে পা রাখার দিকেও এগিয়ে গেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই রেকর্ড করে ফেলেছেন তাঁর প্রথম বলিউড গান, যা খুব শীঘ্রই মুক্তি পাবে বলে জানা গিয়েছে।
এই সিজনের বিচারকের আসনে ছিলেন শ্রেয়া ঘোষাল, বিশাল দাদলানি ও বাদশা। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছেন বিশাল দাদলানি। “উনি সবসময় খুব খোলামেলা মন্তব্য করতেন। যখনই ভাল লাগত, দাঁড়িয়ে প্রশংসা করতেন। সেটা আমার কাছে দারুণ অনুপ্রেরণা ছিল,” বললেন মানসী।

শুধু প্রশংসাই নয়, এই মঞ্চে সমালোচনার মধ্য দিয়েও নিজেকে গড়ে তুলেছেন মানসী। তাঁর কথায়, “এই শো আমাকে শিখিয়েছে কীভাবে শেখা যায়, আবার কীভাবে ভুলে যেতে হয়। খারাপ মন্তব্য হলে সেটা ভুলে গিয়ে পরের পারফরম্যান্সে মন দিতে হয়। প্রতিটা দিন, প্রতিটা মঞ্চই নতুন করে শুরু করার সুযোগ।”
এই মুহূর্তে দেশের সংগীতপ্রেমীদের কাছে মানসী ঘোষ একটি নতুন নাম, নতুন আশা। কলকাতা যেন আবারও প্রমাণ করল—সংগীতের শহর শুধু অতীতে নয়, বর্তমানেও গর্ব করার মতো প্রতিভায় ভরপুর।