
গোপাল শীল, দক্ষিণ ২৪ পরগণা : দক্ষিণ ২৪ পরগণার উপকূলবর্তী অঞ্চলজুড়ে কালবৈশাখীর দাপটে সৃষ্টি হয়েছে চরম আতঙ্ক। বজ্রবিদ্যুৎ, ঝড়ো হাওয়া ও টানা বৃষ্টিপাতের ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এই দুর্যোগের মাঝেই শুক্রবার সন্ধ্যায় মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন এক গৃহবধূ।
ঘটনাটি ঘটেছে গঙ্গাসাগরের ধবলাহাট লালপুর এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মৃত গৃহবধূর নাম মণি কর (৪৪)। ঘটনার সময় তিনি মাঠে থাকা গৃহপালিত পশুকে ঝড়ের হাত থেকে রক্ষা করতে মাঠ থেকে তুলে গোয়াল ঘরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। ঠিক সেই মুহূর্তেই আচমকা বজ্রপাত ঘটে। বজ্রঘাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় মণি করের। একইসঙ্গে মৃত্যু হয় তার একটি গৃহপালিত পশুরও।
বজ্রপাতের বিকট শব্দে এলাকার মানুষ চমকে ওঠেন। দ্রুত ছুটে আসেন পরিবারের সদস্যরা ও স্থানীয় বাসিন্দারা। আহত অবস্থায় মণি দেবীকে তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় সাগর গ্রামীণ হাসপাতালে। তবে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় গঙ্গাসাগর কোস্টাল থানার পুলিশ। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে কাকদ্বীপ মর্গে। ঘটনার পর থেকেই এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। স্থানীয়রা জানান, এই অঞ্চলে কয়েকদিন ধরেই বজ্রবিদ্যুৎ সহ প্রবল ঝড়বৃষ্টি চলছে। প্রশাসনের তরফে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হলেও, প্রতিদিনের জীবিকার তাগিদে অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে মাঠে বের হচ্ছেন। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যদের তরফে পরিবারকে সান্ত্বনা দেওয়া হয়েছে এবং সরকারি সাহায্য পাওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত কালবৈশাখীর এই রোষের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েকদিন উপকূলবর্তী এলাকায় বজ্রসহ বৃষ্টিপাত চলতেই পারে। এই প্রেক্ষিতে সাধারণ মানুষের প্রতি প্রশাসনের কড়া নির্দেশ—অপ্রয়োজনীয়ভাবে ঘরের বাইরে না যাওয়ার এবং বিপদ টের পেলে অবিলম্বে সুরক্ষিত স্থানে আশ্রয় নেওয়ার।