
ওঙ্কার ডেস্ক : দেশকে মাওবাদী-মুক্ত করার লক্ষ্যে কেন্দ্রের অভিযান যখন ইতিবাচক দিকে চলছে, তখন আর কঠোরতা দেখাতে চাইছে না মোদী সরকার। তাই ৫ এপ্রিল ছত্তীসগঢ়ের দান্তেওয়াড়া জেলায় এক সরকারি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত মাওবাদীদের আর “দেশদ্রোহী হিসেবে না দেখে ‘ভাই’ সম্বোধন করেছিলেন। আহ্বান জানিয়েছিলেন, তারা যেন সমাজের। এর ঠিক দু’ দিনের মধ্যে ছত্তীসগঢ়ের দন্তেওয়াড়ায় এক সঙ্গে আত্মসমর্পণ করলেন তিন কমান্ডার-সহ আরও ২৬ জন মাওবাদী গেরিলা। কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআরপিএফের কাছে আন্তসমর্পণ করলেন তাঁরা।
পুলিশ জানিয়েছে, তিন মাওবাদী কমান্ডারের মাথার দাম ছিল সাড়ে চার লক্ষ টাকা। দন্তেওয়াড়ার পুলিশ সুপার গৌরব রাই সোমবার বলেন, ‘‘অন্তর্দ্বন্দ্ব এবং নাশকতার আদর্শের প্রতি মোহভঙ্গের কারণেই এঁরা আত্মসমর্পণ করে সমাজের মূল স্রোতে শামিল হচ্ছেন।’’ এরা নিষিদ্ধ সিপিআই (মাওবাদী)-র সশস্ত্র শাখা পিএলজিএ (পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মি)-র বস্তার ডিভিশনে সক্রিয় বিভিন্ন ‘দলমে’র সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে যুক্ত ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সুপারের দাবি, ছত্তীসগঢ় ‘নিয়া নার নিয়া পুলিশ’ (আমাদের গ্রাম, আমাদের পুলিশ) প্রচার কর্মসূচির ফলেই এই সাফল্য। এই আত্মসমর্পণ নিরাপত্তা বাহিনীকে বাড়তি মনোবল জোগাবে বলে মনে করছেন তিনি। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আত্মসমর্পণকারীরা মাওবাদীরা হল- জনমিলিশিয়া, বিপ্লবী পার্টি কমিটি (আরপিসি), ‘জনতানা সরকার’, দণ্ডকারণ্য আদিবাসী কিষাণ মজদুর সংগঠন (ডিএকেএমএস) এবং চেতনা নাট্যমণ্ডলী (সিএনএম) এর মতো তাদের সম্মুখ ইউনিটের সদস্য।
আত্মসমর্পণকারী তিন নেতার মধ্যে রাজেশ কাশ্যপ আমদই অঞ্চলের জনমিলিশিয়া কমান্ডার হিসেবে সক্রিয় ছিলেন। তাঁর মাথার দাম ছিল তিন লক্ষ টাকা। অন্য দিকে, জনতানা সরকার স্কোয়াডের প্রধান কোসা মাদভী এবং সিএনএম-এর নেতা ছোটু কুঞ্জামের উপর যথাক্রমে এক লক্ষ টাকা এবং ৫০,০০০ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল ছত্তীসগঢ় পুলিশ।
মাওবাদীদের মূল স্রোতে ফেরাতে ২০২০ সালের জুন মাসে ‘লোন ভারাতু’ যার অর্থ ‘বাড়ি ফিরুন’ কর্মসূচি শুরু হয়েছিল ছত্তীসগঢ়ে। পুলিশ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৯৫৩ জন মাওবাদী অস্ত্র ছেড়ে ওই সরকারি পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় শামিল হয়েছেন।