
ত্রয়ণ চক্রবর্ত্তী, কলকাতাঃ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ার মৃত্যুর পর বিশ্ববিদ্যালয় এবং হোস্টেলে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা কড়াকড়ি করার জন্য সিসিটিভি লাগানোর দাবিও আরো জোরালো হয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় সিসিটিভি লাগানোর বিষয়ে নিজেদের পুরনো অবস্থানেই অনড় থাকলেও আলোচনা চায় এসএফআই।
সংগঠনের নেতৃত্ব মনে করেন, সিসিটিভি অপরাধী কে শনাক্ত করতে পারলেও অপরাধ আটকাতে পারে না। বরং সিসিটিভি লাগানোর ফলে ছাত্রছাত্রীদের ব্যাক্তিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা হয়। রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন সংগঠনের নেতৃত্ব। সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় সিসিটিভি লাগানো তে তাদের যে কোন অমত নেই, আবারও তা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিল সংগঠনের নেতৃত্ব। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক বৈঠক করেন এস এফ আই এর রাজ্য কমিটির দুই সদস্য শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও আফরিন বেগম।
এস এফ আই নেতা শুভদীপ বলেন, “সিসিটিভি অপরাধ আটকায় না। শনাক্ত করে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিসিটিভি লাগানো হয়েছিলো কিন্তু অপরাধ আটকানো গিয়েছে কি? নিরাপত্তা অবশ্যই জরুরি। আমরা রাগিং এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। আমরা যতজনের মধ্যে পৌঁছাতে পেরেছি সচেতন করেছি। আমাদের মধ্যে যতজন আছে তাঁদের মধ্যে এই প্রবণতা পাবেন না।
আমাদের সংগঠন রাগিংএর বিরোধিতা করে। বহিরাগতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল থেকে বের করতে হবে আমরা এই আন্দোলন করায় আমাদের সংগঠনের সদস্যদের সমস্যায় পড়তে হয়েছে। সিসিটিভি লাগালে তার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের সারভেলেন্সের চেষ্টা হয় আমরা তার বিরোধিতা করছি। আমাদের লক্ষ্য অপরাধ আটকানো। সিসিটিভি রোহিত ভেমুলাকে কি বাঁচাতে পেরেছিলো?” তবে সিসিটিভি লাগালে নিরাপত্তা বাড়বে বলেও মনে করে বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যান্টি র্যা গিং প্রচারের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর পরাগ সরকার। তিনি বলেন, “যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম র্যা গিং বিরোধী প্রচার শুরু হয়। যা পরবর্তী সময়ে অন্যন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও সেই পথে হেঁটেছে। ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করা গিয়েছে অনেকক্ষেত্রে। কিন্তু তার পরেও বন্ধ করা গেলো না। এখানে নিরাপত্তায় অনেক খামতি রয়েছে। যে কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে পড়ছে। মুক্ত ভাবনা থেকে এটা করা হলেও অপরাধীরা এর সুযোগ নিচ্ছে। সিসিটিভি লাগানোটাও খুবই জরুরি নিরাপত্তার জন্য।” কিন্তু সেই সিসিটিভি লাগানো নিয়ে এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু জানিয়েছেন, যে ঘটনাটি ঘটেছে তা অত্যন্ত মর্মান্তিক। ইতিমধ্যেই বিষয়টা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। ইউজিসির প্রতিনিধি দল বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন সবকিছু খতিয়ে দেখতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বাড়ানোর কথা গুরুত্ব দিয়ে ভাবা হচ্ছে। একতরফা ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় না সবপক্ষ মিলে আলোচনা করেই সবকিছু ঠিক হবে।” এবিষয়ে এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, “এসএফআই এর অভিমত আমরা নিরাপত্তায় আছি নজরদারিতে নেই। যাদবপুরে আছে সিসিটিভি। আরও যদি বসাতে হয় হোক। আমরা রাজি । আলোচনা হোক। কিন্তু সিসিটিভি বসালেই যে সব সমস্যার সমাধান হবে সব অসামাজিক কাজ বন্ধ হবে এমন নয় ।”