
নিজেস্ব প্রতিনিধিঃ এলাকার মহিলাদের দ্বারা লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়ে আত্মঘাতী হলেন গৃহবধূ। ঘটনাটি ঘটেছে, জলপাইগুড়ি জেলায় ফুলবাড়ি ১ নম্বর অঞ্চলের বকরাভিটা গ্রামে।
সমাজ যে এখনো মধ্যযুগীয় ধ্যান ধারণা নিয়েই চলে তার প্রমাণ বারবার সামনে আসছে। কলকাতার বৌ বাজার থেকে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া হয়ে একাধিক ঘটনা সামনে এসেছে। এবার সামনে এল জলপাইগুড়ি জেলায় ফুলবাড়ি ১ নম্বর অঞ্চলের বকরাভিটা গ্রামের এক মর্মান্তিক ঘটনা। মধ্যযুগীয় বর্বরতার শিকার হয়েই আত্মঘাতী হলো এক গৃহবধূ।
জানা গিয়েছে, স্থানীয় তাপস বর্মনের স্ত্রী সবিতা এলাকারই এক বিবাহিত যুবকের প্রেমে পরে ছিলেন। আটদিন আগে প্রমিকের সঙ্গে ঘর ছেড়ে চলে গিয়েছিল ভালবাসার টানে। এই বিষয়ে তাপস নিউ জলপাইগুড়ি থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত একটি অভিযোগও দায়ের করেন। আরও জানা গিয়েছে, দুদিন আগে, সবিতা ফোন করে তাপসকে। বলে, সে বড্ড বিপদে আছে। তাকে বড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে অনুরোধ করে। তাপস তার স্ত্রীকে নিয়ে আসেন। শ্বশুর বাড়িতে রেখে দেন। গোটা বিষয়টি এলাকার পঞ্চায়েত মালতী রায় কে জানান তাপস। মালতী রায়ের উদ্দগ্যে পঞ্চায়েতের কার্যালয়ে সালিশি সভার আয়োজন করা হয়। কিন্তু ঠিক আগের রাতেই এলাকারই কিছু মহিলা তাপসকে এবং তার স্ত্রীকে আসতে বলেন। তাপস তার স্ত্রীকে নিয়ে এলে শুরু হয় গ্রামের মহিলাদের সালিশি সভা। দুইজনকেই বেধড়ক মারধোর করে নীতি মহিলা পুলিশ। তাদের মধ্যে একজনের নাম স্বপ্না অধিকারী, যিনি এলাকায় শাসক দলের নেত্রী বলে পরিচিত বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। তাপস অভিযোগ, গোটা ঘটনাটি পঞ্চায়েতের সামনে ঘটলেও পঞ্চায়েত কিছুই বলেন নি। এরপরেই সবিতা অপমান সহ্য করতে না পেরে কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হন। এই বিষয়ে এলাকার পঞ্চায়েত মালতী রায়ের কোনো বক্তব্য পাওয়া না গেলেও তার স্বামী তথা তৃণমূল নেতা শম্ভু রায় বলেন,মারধরের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
মৃতার স্বামী সহ তার পরিবার এই ঘটনায় দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি করেছে। কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে যে,পাড়ায় পাড়ায় সালিশি সভার মাধ্যমেই যদি সমস্যার সমাধান হয়ে যায় তাহলে সমাজে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা কি??